পেট্রোলবোম-বন্দুকযুদ্ধ ও মানবাধিকার
প্রকাশিত হয়েছে : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ইং, ৫:৪৬ অপরাহ্ণ | সংবাদটি ২২০০ বার পঠিত
ড. সরদার এম. আনিছুর রহমান:
প্রতিদিন সকালে যখন ঘুম থেকে উঠে পত্রিকার পাতায় কিংবা টেলিশিনের পর্দায় চোখ রাখি তখন দেখতে পাই- মানুষ মরছে পেট্রোল বোমায় না হয় বন্দুকযুদ্ধে। এই মৃত্যুর মিছিল ক্রমেই দীর্ঘ হচ্ছে। এটা কোনোমতেই যেন থামাছে না। এতে সহজেই অনুমেয়- বর্তমানে বাংলাদেশ কতটা ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে।
এর আগেও দেশে রাজনৈতিক সংকট ছিলো । তবে এবার নতুন মাত্রায় যোগ হয়েছে পেট্রোল বোমা ও বন্দুকযুদ্ধ । প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও যানবাহনে পেট্রোল বোমা হামলা হচ্ছে । বোমার আগুনে পুড়ে হতাহত হচ্ছে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। এসব ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে এ পর্যন্ত আইনের আওতায় আনা সম্ভব হয়নি । প্রতিটি ঘটনার পরপরই ঢালাওভাবে বিরোধীজোটকে দায়ি করা হচ্ছে । যদিও বোমা-তৈরি ও নিক্ষেপের সঙ্গে উভয়পক্ষের লোকজন ধরাও পড়েছে একাধিক ঘটনায়। ফলে এই যৌথ নিষিদ্ধ সন্তানের নাম দেয়া হয়েছে ‘দুর্বৃত্ত’ । এদের যেন কোনোভাবেই ঠেকানো যাচ্ছে না।
অন্যদিকে গত কয়েকদিনে ঘুম থেকে উঠেই সকালে শোনা যাচ্ছে বন্দুকযুদ্ধে এক যুবক বা সন্ত্রাসী কিংবা অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তি নিহত হয়েছে। এর কিছুক্ষণ পরেই মিলছে তার পরিচয়, জানা যাচ্ছে নিহত ব্যক্তিটি বর্তমান বিরোধী জোটের কোনো দলের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিল। আশ্চার্যজনক হলেও সত্য, এইসব বন্দুকযুদ্ধে হতাহতের ঘটনার পর আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর একই বক্তব্য অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান পরিচালনা করতে গিয়ে পূর্ব থেকে উৎপেতে থাকা সন্ত্রাসীদের সাথে বন্দুযুদ্ধের এক পর্যায়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা গেছে। এ যেন প্রজাতন্ত্রের সেবক আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বন্দুকযুদ্ধের মহোৎসব চলছে। তবে একটি বিষয় অবাক হওয়ার মতো যে, এই বন্দুকযুদ্ধে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর একজন সদস্যও হতাহত হচ্ছে না।
প্রথমে সাদা পোশাকে তুলে নিয়ে যাওয়া, পরে অভিযান, অতপর কথিত বন্দুকযুদ্ধ। কোনো নর্দমা, খাল, বিল অথবা হাসপাতালের মর্গে মিলছে সেইসব মৃতদেহ ।পরে খবর পেয়ে স্বজনরা গিয়ে লাশ শনাক্ত করছেন। মূলত গত ৫ জানুয়ারির পর থেকেই এই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এই পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক।
অবশ্য নিহতদের পরিবারের দাবি, পুলিশ সাধারণ মানুষকে ধরে নিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় গুলি করে হত্যা করছে।
এমনই বিচারবহির্ভুত হত্যাকাণ্ডের জন্য এর আগে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) আন্তর্জাতিক মহলে ব্যাপক সমালোচিত হয়। তবে এবার জড়িয়ে পড়েছে পুলিশ বাহিনী।
এমন হত্যাকাণ্ডের শিকার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্র শাহাবুদ্দিন। সামাজিক মাধ্যম ফেইসবুকের কল্যাণে গত ৫ ফেব্রুযারি রাতে জানতে পারি কাটাখালি থেকে ফেরারপথে মোটরসাইকেল আরোহী রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় তিন ছাত্র শাহাবুদ্দিন, বিনোদপুর মফিজুর রহমান ও হাবিবুর রহমানকে আটক করেছে পুলিশ। পরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে টেলিভিশনের পর্দায় দেখলাম- রাত আড়াইটার দিকে পুলিশের সাথে বন্দুকযুদ্ধে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তিনজনকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত ডাক্তার শাহাবুদ্দিনকে মৃত ঘোষণা করেন।
এর আগে ২৭ জানুয়ারি রাজশাহীতে কলেজ অধ্যাপক নুরুল ইসলাম শাহীন নামের এক জামায়াত কর্মী বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন। তবে পরিবারের দাবি- আগের দিন নগরীর মালোপাড়ার প্রেস থেকে শাহীনকে তুলে নিয়ে যায় সাদাপোষাকদারী ডিবি পুলিশ। পরদিন সকালে অজ্ঞাত মোবাইল থেকে মেডিকেলে লাশ পড়ে থাকার কথা জানানো হয়।
শুধু শাহাবুদ্দিন ও শাহীন নন, অবরোধ-হরতালের গত ৫ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৩২ জন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছে।(সূত্র-আসক) যাদের বেশিরভাগই বিএনপি ও এর অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন এবং জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মী। এ এভাবে প্রতিদিনই মায়ের বুক থেকে সন্তান, বোনের সামনে থেকে ভাইকে, সন্তানের সামনে থেকে বাবাকে, স্ত্রীর সামনে থেকে স্বামীকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাচ্ছে। আর রাত পোহালেই শোনা যাচ্ছে বন্দুকযুদ্ধে মারা গেছে।
মানবাধিকার সংগঠন অধিকারের হিসাব অনুযায়ী, জানুয়ারি মাসেই বিচারবহির্ভুত হত্যাকাণ্ডের শিকার ১৭ জন। চলতি মাসের আরও অন্তত ১৩ জন বিচারবহির্ভুত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন।
এছাড়া ২০১৪ সালে রাজনৈতিক সহিংসতায় নিহত হয়েছে ১৪৭ জন, আর বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন ১২৮ জন, এছাড়া ২০১৩ সালে ৭২ জন, ২০১২ সালে ৯১ জন, ২০১১ সালে ১০০জন, ২০১০ সালে ১১৩জন, ২০০৯ সালে ২২৯ জন, ২০০৮ সালে ১৭৫ জন, ২০০৭ সালে ১৮০ জন এবং ২০০৬ সালে ৩৫২ জন বিচারবহির্ভুত হত্যার শিকার হন।
তবে এসব ঘটনা যে শুধু এই সরকারের আমলেই ঘটছে তা বলার সুযোগ নেই। অতীতে যেমন রক্ষিবাহিনী গঠনের মাধ্যমে রাষ্ট্র মানবাধিকার লঙ্ঘনের পথ সৃষ্টি করেছিল, তেমনি বিগত বিএনপি সরকার ২০০৪ সালে র্যাব-চিতা ও কোবরার নামে এলিট ফোর্স সৃষ্টি করে মানবাধিকার লঙ্ঘনের পথকে সুপ্রশস্ত করে। ফলে কোনো রাজনৈতিক দলই এর দায় এড়াতে পারে না।
অন্যদিকে বিরোধীজোটের ডাকা হরতাল-অবরোধে পেট্রোল বোমায় শিশুসহ সাধারণ মানুষ মারা যাচ্ছে । ইতোমধ্যে চলমান সহিংসতায় ও আগুনে পুড়ে ইতোমধ্যে ৭৮জন মারা গেছে ।
আন্দোলনের নামে আগুনে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা যেমন গ্রহণযোগ্য নয়, তেমনি সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে যেভাবে ব্যবহার করে বিরোধী জোটের নেতাকর্মিদের হত্যা করছে, সেটাও গ্রহণযোগ্য নয়। কারণ যারা মারা যাচ্ছে, এরা একেবারেই প্রান্তিক পর্যায়ের নেতাকর্মী। তাদের বিচারের আওতায় আনতে যথেষ্ট পদক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ক্রসফায়ার বা বন্দুকযুদ্ধের ঘটনার সঙ্গে কখনওই পরিবারের বক্তব্যের মিল খুঁজে পাওয়া যায় না।
এভাবে একটি অপরাধ দমন করতে গিয়ে আরেকটি অপরাধের জন্ম দেয়া এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। তেমনি অপরাধ নিয়ন্ত্রণের নামে রাষ্ট্র কর্তৃক নাগরিকের প্রাণহাণি কোনো সভ্য ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের পরিচয় হতে পারে না। এসব ঘটনায় বলা যায়-আমাদের দেশের রাজনীতি ক্রমশ অমানবিক হয়ে উঠছে। রাজনীতিবিদরাও ক্রমশ নিষ্ঠুর হয়ে উঠছে। ক্ষমতা দখলের জন্য সাধারণ মানুষকে যেমন আগুনে পুড়িয়ে মারতে পারছেন, তেমনি ক্ষমতার মসনদ স্থায়ী করতে প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের ধরে ধরে গুলি করে হত্যাও করতে পারছেন।
আমরা যতদূর জানি, র্যাব যখন সৃষ্টি হয়েছিল, তখন আওয়ামী লীগ বিরোধী দল ছিল। তৎকালীন বিএনপি সরকার আওয়ামী লীগের আন্দোলন দমাতে ব্যর্থ হয়ে র্যাবকে দিয়ে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের সূচনা করেছিল বলে অভিযোগ ছিল আওয়ামী লীগের, তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। পাশাপাশি বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধেরও অঙ্গীকার ছিল তাঁর। যদিও ক্ষমতায় বসার পর সে অঙ্গীকারের বাস্তবায়ন লক্ষ্য করা যায়নি।
আজ রাষ্ট্রে গণতান্ত্রিক চর্চা ও আইনের শাসনের অভাবেই এ সব হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে । অণ্যথা কেউ আগুনে পুড়িয়ে কিংবা অন্য কোনভাবে হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে পার পেয়েও যেত পারতো না। রাষ্ট্রে যখন আইনের শাসন সুনিশ্চিত হয়, তখন একদিকে যেমন অপরাধ প্রবণতা কমে আসে, অন্যদিকে আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের প্রয়োজন হয় না।
রাষ্ট্রে আজ নাগরিকরা নিরাপত্তাহীন। বর্তমানে ঘরের বাইরে বের হওয়া বিপজ্জনক হয়ে পড়েছে। ফলে এসব হত্যাকে যেভাবেই সংজ্ঞায়িত করা হোক না কেন, রাষ্ট্র এর দায় এড়াতে পারে না। বর্তমানে বিচারবহির্ভুত হত্যা আর রাজনৈতিক সহিংসতায় মানুষ হত্যার ঘটনায় প্রতীয়মান হয় যে, বর্তমানে বাংলাদেশে গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরিস্থিতি কতটা নাজুক। এখানে মানুষের জানমালের স্বাভাবিক নিরাপত্তা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা, সভা-সমাবেশ করার অধিকারের বিষয়টি সংকোচিত হয়েছে।
বাংলাদেশে চলমান অস্থিরতা ও সহিংসতার ঘটনায় ইতোমধ্যে জাতিসংঘ, যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যসহ প্রভাবশালী কয়েকটি রাষ্ট্র এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ (এইচআরডব্লিউ) বিশ্বের মানবাধিকার সংগঠনগুলো এসব কর্মকাণ্ডের নিন্দা জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে।
সরকার ও আইন শৃংখলা বাহিনী যেভাবেই এসব হত্যাকাণ্ডকে বৈধ করার চেষ্টা করুক না কেন। ক্রসফায়ারের নামে যেভাবে মানুষ হত্যা করা হচ্ছে তা কোনো সভ্য সমাজে চলতে পারে না।
এ কথা সবার জানা, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার স্লোগান নিয়ে আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের বাঙালী জাতি ঝাপিয়ে পড়েছিল পাকিস্তানী স্বৈরাচার আর সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে। দীর্ঘ ৯ মাস যুদ্ধে অনেক রক্ত আর ত্যাগের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন করে জনগণ। আজ দেশ স্বাধীনের ৪৩ বছর পরও একই হানাহানি। যে গণতন্ত্রের জন্যে এতো আত্মত্যাগ, আজ সেই গণতান্ত্রিক চর্চা ও মূল্যবোধ কোথায়?
দেশের মানুষের রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড ও মানবাধিকার এবং স্বাধীনতা ক্রমেই সংকীর্ণ হচ্ছে। যত্রতত্র হামলা হচ্ছে, পত্রিকা অফিসেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হঠাৎ অভিযান চালানো হচ্ছে, গ্রেফতার হচ্ছে সংবাদকর্মী, সংবাদ প্রকাশে প্রতিনিয়ত হুমকি-ধমকির সম্মুখীন হচ্ছে দেশের মিডিয়াগুলো। চলছে প্রতিনিয়ত বিরোধীমত দমন-নিপীড়ন, সভা সমাবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। দিন দিন সব কিছু অবনতির দিকে যাচ্ছে। এগুলো দেশের জন্য শুভকর নয়।
জোর করে ক্ষমতা দখল যেমন গণতান্ত্রিক রীতি নয়, তেমনি জনমতকে উপেক্ষা করে জোর করে ক্ষমতা ধরে রাখা কোনো গণতান্ত্রিক আচরণ হতে পারে না। ‘গণতন্ত্র’ মানে নিছক নির্বাচন নয়, রাষ্ট্রগঠনের-প্রক্রিয়া ও ভিত্তি নির্মাণের গোড়া থেকেই জনগণের ইচ্ছা ও অভিপ্রায় নিশ্চিত করা। জনগণের সেই ইচ্ছা ও অভিপ্রায় রাষ্ট্র পরিচালনার সর্বক্ষেত্রে নিশ্চিত করা না গেলে তাকে কোনোভাবেই ‘গণতন্ত্র’ বলা যায় না।
নিজের অধিকারের উপলব্ধির মধ্যে দিয়েই অপরের অধিকার এবং নিজেদের সমষ্টিগত অধিকার ও দায়-দায়িত্ব সম্পর্কে সচেতন হওয়া ও তা বাস্তবায়ন করা সম্ভব। ব্যক্তির যে-মর্যাদা অলঙ্ঘনীয়, প্রাণ, পরিবেশ ও জীবিকার যে-নিশ্চয়তা বিধান করা ছাড়া রাষ্ট্র নিজের ন্যায্যতা লাভ করতে পারে না এবং যে সব নাগরিক অধিকার সংসদের কোনো আইন, বিচারবিভাগীয় রায় বা নির্বাহী আদেশে রহিত করা যায় না- সেই সব অলঙ্ঘনীয় অধিকার অবশ্যই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগঠনের ভিত্তি।
মানুষ ও নাগরিক হিসেবে এই সব অধিকার ঐতিহাসিক লড়াই-সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে মানবেতিহাস অর্জন করেছে এবং সেই সব অধিকারের সার্বজনীনতা নানান আন্তর্জাতিক ঘোষণা, সনদ ও চুক্তির মধ্যে দিয়ে আজ বিশ্বব্যাপী প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু সেই স্বীকৃত অধিকারগুলো কী বাংলাদেশের নাগরিকরা ভোগ করতে পারছেন?
ফলে বলা যায়- স্বীকৃত অধিকারগুলো নাগরিকরা যতদিন স্বাধীনভাবে ভোগ করতে না পারবে ততদিন তাদের সংগ্রাম চলবেই। আর সংগ্রামের মধ্যদিয়েই তাদের অধিকার একসময় প্রতিষ্ঠিত হবে।
তাই যদি কেউ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সংঘটিত করে, তাহলে তাকে আইনের আওতায় এনে বিচার করাটা রাষ্ট্রের দায়িত্ব।’ কিন্তু বিনা বিচারে মানুষ হত্যা করা কোনোভাবেই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের রীতি হতে পারে না। এতে অপরাধ প্রবণতা হ্রাস না পেয়ে বরং প্রতিহিংসাকে উৎসাহিত করে।এতে গুপ্তহত্যাসহ অন্যান্য অপরাধ বেড়ে যেতে পারে।
আর গণতান্ত্রিক পরিবেশ যেখানে নেই, সেখানে মানবাধিকার লঙ্ঘন স্বাভাবিক ঘটনা। মানবাধিকারের সুরক্ষার জন্য যেমন গণতান্ত্রিক পরিবেশ অত্যাবশ্যক, তেমনি গণতন্ত্র সফলের জন্য মানবাধিকার নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
তাই সরকারের প্রতি আহবান রাখবো, অবিলম্বে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ করে অপরাধীদের বিচারিক প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত দেওয়া হোক। সেই সাথে আইনের শাসন কায়েম করে নাগরিকের গণতান্ত্রিক অধিকারসমূহ নিশ্চিত করা হোক, তবে আশা করা রাষ্ট্রে শান্তি ফিরে আসবে।
লেখক: শিক্ষা ও সমাজ বিষয়ক গবেষক, ই-মেইল- sarderanis@gmail.com