লঙ্কানদের কাছে বড় হার বাংলাদেশের
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ইং, ৪:৩০ পূর্বাহ্ণ | সংবাদটি ৯৬৪ বার পঠিত
এমন বাজে ফিল্ডিং কত আগে করেছিলো টাইগাররা। তা নিজেরাও হয়ত মনে করতে পারবে না। আর মনে করারও কোন প্রয়োজন নেই। কারণ ভুলে ভরা ফিল্ডিং এর ম্যাচে রানের পাহাড় গড়েছিলো লংকানরা। আর এর নীচে চাপাপ পরে টাইগাররা। ৯২ রানের বিশাল হার দিয়েই শেষ করল তৃতীয় ম্যাচ। এর আগে আফগানদের হারিয়েছিলো টাইগাররা। আর বৃষ্টির কল্যাণে এই পয়েন্ট আদায় করতে পারে অজিদের কাছ থেকে। টানা সাত ম্যাচের ছয়টিতে জয়ের পর (একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত) পরাজয় বরণ করলো মাশরাফি বাহিনী। ৪৭ ওভারে সবকটি উইকেট হারিয়ে ২৪০ রানে থামে টাইগারদের ইনিংস। ফলে, ৯২ রানের পরাজয় মেনে নিল টাইগাররা।
লংকানদের বেধে দেওয়া ৩৩৩ রানের টার্গেটে বাংলাদেশের হয়ে ব্যাটিং উদ্বোধন করতে নামেন তামিম ইকবাল এবং এনামুল হক বিজয়। তবে, ইনিংসের দ্বিতীয় বলে তামিমকে শূন্য রানে বোল্ড করে সাজঘরে ফেরান লাসিথ মালিঙ্গা।
বাংলাদেশের বাঁহাতি ওপেনার তামিম ফিরলেও তিন নম্বরে নামা আরেক বাঁহাতি সৌম্য সরকার টাইগারদের রানের চাকা সচল রাখেন। চতুর্থ ওভারে লাকমলকে পরপর তিনবার সীমানা ছাড়া করেন সৌম্য। তবে, খুব বেশিদূর যেতে পারেননি সৌম্য। ১৫ বলে ২৫ রান করে ম্যাথুজের বলে উইকেটের পিছনে সাঙ্গাকারার হাতে ধরা পড়েন তিনি।
তামিম, সৌম্য ফিরলে ব্যাটিং ক্রিজে আসেন মমিনুল হক। সপ্তম ওভারে তিনিও সাজঘরে ফেরেন। লাকমলের বলে জয়াবর্ধনের তালুবন্দি হন মমিনুল (১ রান)।
দলীয় ৪১ রানের মাথায় টপঅর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে টাইগাররা। সেখান থেকে দলকে টেনে তোলার চেষ্টা চালান মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ এবং ওপেনার বিজয়। তবে, ১৬তম ওভারে গিয়ে রানআউটের শিকার হন ৪৩ বলে এক চার আর এক ছয়ে ২৯ রান করা বিজয়।
বিজয়ের আউটের পর ব্যাটিং ক্রিজে আসেন সাকিব আল হাসান। বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডারের সঙ্গে মাত্র ১৬ রানের জুটি গড়ে মাহামুদুল্লাহ রিয়াদ দলীয় ১০০ রানের মাথায় পেরেরার বলে হেরাথের তালুবন্দি হন।
দলীয় শত রানে ৫ উইকেট হারানোর পর টাইগারদের আশার আলো দেখায় সাকিব-মুশফিক জুটি। এ দুই ব্যাটসম্যান ৬৪ রানের জুটি গড়েন। ব্যক্তিগত ৪৬ রানে (৫৯ বলে চারটি চার আর একটি ছয়) সাকিব আউট হন।
বাংলাদেশ ৬ উইকেট হারিয়ে দুশো রানের কোটা পার হওয়ার পর সাজঘরে ফিরলেন ৩৯ বলে ৩৬ রান করা মুশফিকুর রহিম। লাকমলের বলে বোল্ড হন তিনি। সাঙ্গাকারার স্ট্যাম্পিংয়ে ফেরেন মাশরাফি। তবে, ৫৩ রানের একটি ইনিংস খেলেন সাব্বির রহমান।
পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল তিন উইকেট হারিয়ে ৬০ রান। ২০ ওভার শেষে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় চার উইকেট হারিয়ে ৯৫ রান। আর ৩০ ওভার শেষে ৫ উইকেট খুঁইয়ে বাংলাদেশ তোলে ১৪৫ রান। ৪০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে টাইগারদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ২০৪ রান।
এর আগে সকালে টসে জিতে টাইগারদের তুলোধুনো করে ৩৩৩ রানের টার্গেট দিয়েছে শ্রীলংকা। বৃহস্পতিবার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে শ্রীলংকা দলের দিলশান ও সাঙ্গাকারা ডবল সেঞ্চুরি করে বড় স্কোর গড়তে সক্ষম হন।
বিশ্বকাপের এই ম্যাচে ১৬১ রান দিলশানের ব্যক্তিগত ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ ইনিংস। আর দিলশানের ৪০০তম ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ২২তম সেঞ্চুরি।
সেই সাথে বড় চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলো বাংলাদেশকে। আর পুরো খেলায় ক্যাচ মিসের মাশুল গুনতে হলো মাশরাফির দলকে।
বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে দিলশানের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে বড় সংগ্রহ করতে সক্ষম হয় শ্রীলঙ্কা। ওপেনিং এ নেমে ১৪৬ বল খেলে ১৬১ রানের ঝড়ো ইনিং খেলেন দিলশান।
তাকে সঙ্গ দিয়ে ১০৫ রানের আরেকটি সেঞ্চুরি করেন সাঙ্গাকারা। এদিক থেকে বাংলাদেশ দলের বোলাররা ছিলেন একেবারেই ব্যর্থ।
ব্যক্তিগত ৫২ রানে রুবেলের বলে তাসকিনের হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন থিরিমান্নে।একমাত্র উইকেটটি পেয়েছেন রুবেল হোসেন।
প্রথম ওভারেই মাশরাফির তৃতীয় বলে স্লিপে এনামুল হকের ক্যাচ মিস হয়। এরপর সাব্বিরের বলে স্ট্যাম্পিংয়ের হাত থেকে জীবন পেয়ে যান তিনি।
ভাষ্যকার উইকেট কিপারের এই ব্যর্থতাকে ছেলে মানুষি বলে আখ্যায়িত করতে দ্বিধাবোধ করেননি। ফিল্ডিংয়ের দিক থেকেও বাংলাদেশ দল ছিলো বেশ দুর্বল।
আফগানিস্তানকে ১০৫ রানে হারিয়ে বিশ্বকাপ অভিযানে শুভ সূচনা করে বাংলাদেশ। বৃষ্টির কারণে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে তাদের পরের ম্যাচটি পরিত্যক্ত হয়ে যায়।
অন্যদিকে নিজেদের প্রথম ম্যাচে নিউ জিল্যান্ডের কাছে ৯৮ রান হারে শ্রীলঙ্কা। আফগানিস্তানের বিপক্ষে পরের ম্যাচে ঘাম ঝরিয়ে ৪ উইকেটে জেতে তারা।