৩৫ মাস ধরে সোফার দুটি চেয়ার পাঁকা!
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ইং, ৫:১৩ পূর্বাহ্ণ | সংবাদটি ১০৯০ বার পঠিত
মোহাম্মদ আলী শিপন::যেখানে প্রতি সপ্তাহ কিংবা মাসে দুই একদিন করে সোফার চেয়ারটি ব্যাপার করা হত। সেখানে ওই চেয়ারটি দীর্ঘ প্রায় ৩৫ মাস ধরে রয়েছে একদম পাঁকা। চেয়ারটি হল নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর। তিনি যখন নিজ গ্রামের সিলেটের বিশ্বনাথের রামধানার বাড়িতে আসতে, তখন ওই চেয়ারে বসে দলীয় নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলতেন। নিখোঁজ হওয়ার পর থেকে ওই চেয়ারে আজ পর্যন্ত তাঁর পরিবার কিংবা দলীয় কোন নেতাকর্মী বসে কথা বলেনি বলে জানাগেছে। ২০১২ সালে ১৭ এপ্রিল ঢাকা বনানী থেকে নিখোঁজ হন বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলী তাঁর গাড়ি চালক আনসার আলী। নিখোঁজের দীর্ঘদিন ফেরিয়ে গেলেও আজও তাঁর কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি। ইলিয়াস আলীর সন্ধান দাবিতে তাঁর নির্বাচনী এলাকা সিলেটের বিশ্বনাথ-বালাগঞ্জ-ওসমানীনগরে আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। ২০১২ সালের ২৩ এপ্রিল হরতাল চলাকালে বিশ্বনাথে সহিসংতার ঘটনায় তিনজন নিহত হন। গত কয়েকটি ঈদ ইলিয়াস আলীকে ছাড়াই তাঁর পরিবার ও দলীয় নেতাকর্মী উদযাপন করেন। তবে ইলিয়াস পরিবারের মধ্যে ছিল না ঈদের কোন আনন্দ। তবে তাঁর পরিবার ও দলীয় নেতাকর্মীরা বিশ্বাস করেন তিনি আবারও ফিরে আসবেন। তাঁর ফিরে আশার অপেক্ষার প্রহর গুণছেন তারা।
জানাযায়, ইলিয়াস আলী নিখোঁজের পর ইলিয়াস পতœী তাহসিনা রুশদী লুনা,তাঁর দুই ছেলে ও এক মেয়ে কয়েক বার গ্রামের বাড়িতে আসা-যাওয়া করেছেন। ইলিয়াসপতœী বাড়িতে আসার খবর পেয়ে সকাল থেকে ইলিয়াস আলীর বাড়িতে দলীয় নেতাকর্মীসহ এলাকার সাধারন মানুষ ইলিয়াস পতœী তাহসিনা রুশদী লুনার সাথে দেখা করতে আসতেন। সম্প্রতি ইলিয়াসপতœী তাহসিনা রুশদি লুনা তাঁর স্বামীর বাড়িতে আসেন। খবর পেয়ে দলীয় নেতাকর্মীরা তার সাথে দেখা করতে ছুটে যান রামধানায়। ইলিয়াস আলীর বাড়িতে তাঁর নির্মিত বৈঠকখানায় একটি বৈঠক খানায় রয়েছে। নেতাকর্মীদের বসার জন্য ওই বৈঠক খানায় প্রায় শতাধিক চেয়ার রাখা হয়েছে। কিন্তু ওই চেয়ারগুলো দলীয় নেতাকর্মীরা এসে আগে-বাগে জুড়ে বসেন। রুমের মধ্যে আর বসার মধ্যে কোন চেয়ার না থাকায় অনেকেই দাড়িয়ে থাকতে হয়েছে। তবে রুমে ভিতরে একটি খালি সোফার চেয়ার ছিলেন। সেটি ছিল নিখোঁজ ইলিয়াস আলীর। যার ফলে ওই চেয়ারে কাউকে বসতে দেওয়া হয়নি। তিনি নিখোঁজের পূর্বে বাড়িতে নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষের সাথে কথা বলার জন্য এক রুমের একটি বড় বৈঠক খানা নির্মাণ করেন। ওই রুমের বিভিন্ন জায়গায় তাঁর ছবি,খালেদা-তারেকের ছবি রয়েছে। তাহার বসার আলাদা সোফার চেয়ারও রয়েছেন। পরিবারের মূল ঘরের সাথে আরোও একটি তাঁর ছোট বৈঠক খানার রুম রয়েছে। ওই রুমেও তাঁর বসার আলাদা সোফার চেয়ার রয়েছেন। তিনি নিখোঁজ হওয়ার পূর্বে ওই দুটি রুমে বসে দলীয় নেতাকর্মী ও এলাকাবাসির সাথে আলাপ করতেন। ইলিয়াস আলী নিখোঁজের পর থেকে তাঁর ব্যবহৃত দুটি চেয়ারে আজ পর্যন্ত কেউ বসে কথা বলেলনি। দলীয় নেতাকর্মী কিংবা ইলিয়াস পরিবারের কেউ ওই দুটি সোফার চেয়ার আজ পর্যন্ত বসেননি। তবে কেউ কেউ ওই চেয়ারগুলোতে ভুলে বসলে তাদের তুলে দেওয়া হত।
এব্যাপারে উপজেলা বিএনপির সভাপতি জালাল উদ্দিন চেয়ারম্যান, তিনি (ইলিয়াস) নিখোঁজের পর থেকে ওই দুটি চেয়ারে কাউকে বসতে দেওয়ায় হয়নি। ফলে ওই তিনি ফিরে না আসা পর্যন্ত এভাবে থাকবে।
তিনি বলেন, আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস তিনি ফিরে আসবেন। তিনি না আসা পর্যন্ত আন্দোলন সংগ্রাম অব্যাহত থাকবে।