বিশ্বনাথের শুঁটকি যাচ্ছে দেশের সর্বত্র
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ ইং, ১০:১০ পূর্বাহ্ণ | সংবাদটি ৮০৩ বার পঠিত
আবুল কাশেম::সিলেটের বিশ্বনাথের শুঁটকি যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলায়। উপজেলার লামাকাজি ইউনিয়নের মাহতাবপুর শুঁটকি ব্যবসায়ীরা দীর্ঘদিন ধরে দেশের নানা জায়গায় শুঁটকি পাঠাচ্ছেন। এতে করে একদিকে আয় বাড়ছে ব্যবসায়ীদের, অন্যদিকে চাঙ্গা হচ্ছে লামাকাজি ইউনিয়নের মাহতাবপুরসহ আশপাশের কয়েকটি গ্রামের মানুষের স্থবির জীবন। শুঁটকি ব্যবসাকে কেন্দ্র করে বেকারত্বের হারও কমেছে অনেক। সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়কের লামাকাজি ইউনিয়নের মাহতাবপুর নামক গ্রামের সড়কের উত্তর পাশে আছে বিরাট আকারের মাছের আড়ত। আর দক্ষিণ পাশে আছে শুঁটকির আড়ত।
সরেজমিনে লামাকাজি ইউনিয়নের মাহতাবপুর ঘুরে দেখা যায়, শুঁটকি ব্যবসায়ীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। কেউ শুঁটকি শুকাতে ব্যস্থ, কেউবা শুকিয়ে যাওয়া শুঁটকি বাজারে নেয়ার কাজে ব্যস্ত, আবার কেউবা মাছের আড়ৎ থেকে মাছ আনার কাজে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। সবাই সুশৃঙ্খলভাবে কাজ করে চলেছেন।
কয়েকজন ব্যবসায়ীর সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবছর নভেম্বর মাস থেকে শুঁটকির মৌসুম শুরু হয়ে মার্চ মাস গিয়ে শেষ হয়। শুঁকির মৌসুম আসলেই ব্যবসায়ী-শ্রমিক সবার মধ্যেই শুরু হয় প্রাণচাঞ্চল্য। কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েন সবাই। সব ধরনের মাছের শুঁটকি দেয়া হলেও টেংরা ও পুঁটি মাছের শুঁটকিই এখানে বেশি হয়। প্রায় ৪০ জন ব্যবসায়ী এখানে বিনিয়োগ করেছেন। সবমিলিয়ে দুই শতাধিক শ্রমিক কাজ করছেন এই শুঁটকি আড়তে। গড় প্রতি দুইশত টাকা করে মজুরি পাচ্ছেন শ্রমিকরা। সে হিসেবে দুই শ জন শ্রমিকের জন্য মাসে ব্যবসায়ীদের খরচ হচ্ছে ১২ লাখ টাকা। পুরুষদের পাশাপাশি নারী শ্রমিকরাও এখানে কাজ করেন।
ব্যবসায়ী হেলাল আহমদ জানান,তিনি এই বছর থেকে শুঁটকি ব্যবসা শুরু করেছে। তিনি পাঁচ লাখ টাকা ব্যয় করে এক লাখ টাকা আয় করেছেন।
ব্যবসায়ী কালা মিয়া, জাকির হোসেন, গিয়াস উদ্দিন বলেন,‘আমরা শুঁটকি সিলেটের বৃহৎ শুঁটকি আড়ত ছড়ারপার এলাকায় পৌঁছে দেই। সেখান থেকে শুঁটকি সারা দেশে পৌঁছে যায়।’
শুঁটকি ব্যবসা করে বেশিরভাগ ব্যবসায়ীই স্বাবলম্বী হয়েছেন। তাদের হাত ধরে এলাকার বেকার যুবকরাও এ কাজে জড়িত হচ্ছে। ফলে একদিকে এলাকার অর্থনৈতিক উন্নতি হচ্ছে,অপরদিকে বেকারত্বও কমছে।
শ্রমিক আব্দুর রহমান জানান, শুঁটকির কাজ তিনি গত পাঁচ বছর যাবৎ কাজ করছেন। আর এই কাজের টাকাই ছয় সদস্যের পরিবার চলে।
নারী শ্রমিক মিনারা বেগম বলেন, দীর্ঘদিন ধরে তিনি শুঁটকি ব্যবসায়ীদের সাথে কাজ করছেন। প্রতিদিন প্রায় আড়াইশত টাকা রুজি করেন। এই শুঁটকি ব্যবসা আমাদের এলাকার চেহারা পাল্টে দিয়েছে।
লামাকাজি ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়া বলেন, এক সময় এলাকার যুবকরা বেকারত্বের অভিশাপ বয়ে বেড়াত। এই শুঁটকি ব্যবসা আমাদের এলাকার অনেক বেকারত্ব দূর হয়েছে।