যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারলিনা অঙ্গরাজ্যের চ্যাপল হিলে বন্দুক হামলায় নিহত তিন মুসলিম শিক্ষার্থীর দাফসে প্রচুর লোক সমাগম হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাজধানী রালিঘে এক ধর্মীয় আবহে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে তাদের নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। এতে প্রচুর লোক অংশ নিয়েছিল।
মঙ্গলবার এক বন্দুকধারীর গুলিতে নিহত হন চ্যাপেল হিলের বাসিন্দা ডেহ স্যাডি বারাকাত(২৩), তাঁর স্ত্রী ইউসোর আবু-সালহা(২১) ও বোন রাজন আবু-সালহা(১৯)। নিহতদের পরিবারের সদস্যরা বলছেন, দেশটিতে মুসলিমদের প্রতি গড়ে ওঠা ঘৃণার কারণে তারা অকালে প্রাণ দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার নিহতদের নামাজে জানাজায় হাজার হাজার মানুষ অংশ নেয়। এতে অন্তত সাড়ে পাঁচ হাজার লোক অংশ নিয়েছিল বলে পুলিশের বরাত দিয়ে জানিয়েছে বিবিসি। জানাজা শেষে তাদের মৃতদেহ রালিঘের বাইরে এক মুসলিম গোরস্থানে দাফন করা হয়। এ সম্পর্কে প্রত্যক্ষদর্শী নাসরিন শাবিন বলেছেন,এটি আমার দেখা সবচেয় বড় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া। প্রচুর মানুষ এসেছিল। সবাই ছিল শোকার্ত। এ যেন একটা ম্যাজিক।’
নিহত স্যাডি বারাকাত এবং তার স্ত্রী এবং বোন নর্থ ক্যারলিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের দন্ত বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার সন্দেহে বুধবার ক্রেইগ স্টেফেন হিকস নামে ৪৬ বছরের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে বলে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে চ্যাপেল হিল পুলিশ বিভাগ।
পুলিশ বলছে, সম্ভবত গাড়ি পার্কিংকে কেন্দ্র করে সৃষ্ট বিতর্ক থেকে এই হত্যার ঘটনাগুলো ঘটেছে। তবে পুলিশের এ বিবৃতি নাকচ করে দিয়েছেন বারাকাতের শ্বশুড় এবং তার স্ত্রী ইউসোর আবু-সালহা’র বাবা মোহাম্মদ আবু সালহা। এসব হত্যাকাণ্ডকে ‘ঘৃণাজনিত অপরাধ’ হিসেবে আখ্যায়িত করে তিনি বলেছেন,‘আমরা প্রতিশোধ চাইনা। অপরাধীর কি শাস্তি হবে তা নিয়েও আমরা ভাবছি না। আমরা কেবল তাদেরকে কেন হত্যা করা হল এ সত্যিটা জানতে চাই।’
স্থানীয় মুসলিম নেতারাও এ হত্যাকাণ্ডের জন্য দেশটিতে গত কয়েক বছর ধরে গড়ে ওঠা মুসলিম বিরোধী মনোভাবকে দায়ি করেছেন। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের কেয়ার ন্যাশনালের এক্সিকিউটিভ ডিরেকটর নিহাদ আওয়াদ এক বিবৃতিতে বলেছেন,‘এই অপরাধের নৃশংস প্রকৃতি এবং কথিত অপরাধীর ধর্ম বিরোধী বিবৃতি এই ইঙ্গিত দেয় যে, আমেরিকান সমাজে ক্রমবর্ধমান মুসলিম বিরোধী প্রচারণার ফসল এ হত্যাকাণ্ড।’