উপ-নির্বাচনে জমে উঠেছে ২ নারীর লড়াই
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ মার্চ ২০১৫ ইং, ১১:৪৯ পূর্বাহ্ণ | সংবাদটি ৮৩৮ বার পঠিত
ডেইলি বিশ্বনাথ নিউজ ডেক্স::মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা পরিষদের উপ-নির্বাচনে দুই নারীর লড়াই জমে উঠেছে। তাদের একজন হচ্ছেন দু’বারের উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত আলহাজ এম এ মুমীত আসুকের সহধর্মিনী গুলশান আরা মিলি, অন্যজন সদর জায়ফরনগর ইউনিয়নের সাবেক তিন বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান বিশিষ্ট সমাজসেবক ও দানবীর মরহুম আবদুল মক্তদীরের মেয়ে হুসনেআরা। গুলশান আরা মিলি উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং হুসনে আরা উপজেলা বিএনপির নেত্রী। গুলশান আরা মিলি ঘোড়া প্রতীক ও হুসনে আরা মোটরসাইকেল প্রতীক নিয়ে ভোটযুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছেন। এ দুই নারী নেত্রীকে নিয়ে মাঠে, ময়দানে চায়ের দোকানসহ সর্বত্র চলছে আলোচনার ঝড়। তাদের কর্মী-সমর্থকরাও ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নিজ নিজ প্রার্থীর পক্ষে ভোট প্রার্থনা করছেন।
যে কারণে আলোচিত গুলশান আরা মিলি:
গুলশান আরা মিলি জুড়ী উপজেলা পরিষদের সাবেক দু’বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান, শিক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখে বাংলাদেশের শ্রেষ্ঠ উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকট থেকে স্বর্ণপদক লাভকারী, মৌলভীবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি, অসংখ্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব এম এ মুমীত আসুকের স্ত্রী। জুড়ীবাসীর সেবায় নিজেকে উৎসর্গকারী আসুককে দ্বিতীয়বার উপজেলাবাসী উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যে তিনি ইন্তেকাল করায় তার অসমাপ্ত উন্নয়নকাজ সম্পন্ন করার লক্ষ্যে গুলশান আরা মিলি জুড়ীবাসীর সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করেছেন। গুলশান আরা মিলি ঘোড়া প্রতীক নিয়ে স্বামী হারানোর চাপা কান্না আর কষ্টের মাতম বুকে ধরে গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে ছুটে বেড়াচ্ছেন। তার আবেগপ্রবণ বক্তৃতায় স্বামীর কথা মনে করে নিজে কাঁদছেন, হাজারো মানুষকেও কাঁদাচ্ছেন। তার প্রতি কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এলজিআরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবুল মুহিত, ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিজবাহ উদ্দিন সিরাজসহ কেন্দ্রীয় ও জেলার অনেক আওয়ামী লীগ নেতার সমর্থন রয়েছে।
এছাড়া ৭ মার্চ তার বাংলোবাড়িতে এক সভায় গুলশান আরা মিলির প্রতি নিজের ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সমর্থনের কথা জানিয়ে যান সমাজকল্যাণমন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা সৈয়দ মহসিন আলী এমপি। জানা গেছে, গোয়ালবাড়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ সামছুদ্দিন আহমদের মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে তার ছেলে শাহাব উদ্দিন লেমন, একই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান কমর উদ্দিনের মৃত্যুর পর তার ভাই সফিক উদ্দিন, সদর জায়ফরনগর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল মক্তদীরের মৃত্যুর পর উপনির্বাচনে তার ভাই বদরুল আলম বলাইসহ বেশ কয়েকটি উপনির্বাচনে মৃত ব্যক্তির পরিবারের কেউ না কেউ বিজয়ী হন। সে হিসেবে এই উপনির্বাচনে আগের নির্বাচনগুলোর রেশ পড়বে বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন। তারা মনে করেন, গুলশান আরা মিলি বিপুল ভোটের ব্যবধানে নির্বাচিত হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
যে কারণে হুসনে আরা আলোচনায়:
হুসনে আরা উপজেলা বিএনপির নেত্রী। তিনি সদর জায়ফরনগর ইউনিয়নের সাবেক ৩ বারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান, মক্তদীর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও অসংখ্য স্কুল-মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা, বিশিষ্ট সমাজসেবক, দানবীর আবদুল মক্তদীরের সুযোগ্য কন্যা। তিনি মক্তদীর বালিকা উচ্চবিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতিসহ অসংখ্য সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। তার প্রতি জেলা বিএনপির সভাপতি এম নাসের রহমান, সাধারণ সম্পাদক খালেদা রব্বানী, স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনসহ ২০ দলীয় জোটের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে। মোটরসাইকেল প্রতীকের এ প্রার্থী গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভাইস চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রায় ২৭ হাজার ভোট পেয়েছিলেন। উপজেলার সর্বত্র তার রয়েছে বিশাল ভোট ব্যাংক। এ কারণে তিনি এই উপনির্বাচনে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হতে পারেন বলে তার কর্মী-সমর্থকরা আশাবাদী।