‘মৃত্যুর’ আড়াই বছর পর জীবিত উদ্ধার
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ মার্চ ২০১৫ ইং, ৫:১৭ অপরাহ্ণ | সংবাদটি ৮৮৮ বার পঠিত
নিউজ ডেক্স::‘মৃত মানুষের জীবিত’ হওয়ার খবরে কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার আলিকামোরা গ্রামে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
চান্দিনা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জানান, উপজেলার মাইজখার ইউনিয়নের আলিকামোরা গ্রামে জমি-জমা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মো. সিদ্দিকুর রহমান ও তাঁর ছোট ভাই ইছমত আলীর মধ্যে বিরোধ চলছে। এ কারণে লুকিয়ে থাকেন ইছমত আলী। তাঁকে অপহরণ করে গুম করার অভিযোগে সিদ্দিকুর ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে মামলা করেন ইছমত আলীর স্ত্রী মাজেদা আক্তার। এ ঘটনায় জেল খাটাসহ বিভিন্নভাবে পুলিশি হয়রানি এবং আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন সিদ্দিকুর ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
মেহেদী হাসান আরো জানান, গা-ঢাকা দেওয়ার পর থেকেই ইছমত হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলার হরিণখোলা গ্রামের আমজাদ খাঁর খামারবাড়িতে কৃষি কাজ করছিলেন। দীর্ঘদিন একই বাড়িতে কাজ করায় কাশিমনগর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আনোয়ার হোসেনের সন্দেহ হয়। তিনি ইছমতের বাড়ির ঠিকানা জানতে চান। ঠিকানা যাচাইয়ের জন্য আনোয়ার চান্দিনা থানায় একটি চিঠি পাঠান। ওই চিঠির মাধ্যমে জানা যায় ইছমত বেঁচে আছেন। এরপর বৃহস্পতিবার রাতে ইছমতকে সেখান থেকে আটক করে চান্দিনা থানায় আনা হয়।
শুক্রবার হাতকড়া পরিয়ে ইছমতকে নিয়ে আলিকামোরা গ্রামে যায় পুলিশ। এ সময় তাঁকে একনজর দেখতে ছুটে আসে গ্রামের নারী, পুরুষ, শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের লোকজন।
নাছিমা বেগম নামের এক গৃহবধূ বলেন, ‘মরা ব্যাটা জ্যাতা হইছে। আগে শুনছি মাইরা ফালাইছে, পায় না। এখন শুনি তারে আনছে তাই চাইতাম আইছি।’
কথা হয় সিদ্দিকুর রহমানের সঙ্গে। বললেন, পৈতৃক সম্পত্তি নিয়ে ১৯৯৫ সাল থেকে ছোট ভাইয়ের সাথে বিরোধ চলছে। এ নিয়ে ২০১২ সাল পর্যন্ত ৪৫ বার সালিশ হয়েছে। প্রত্যেকবার ইছমত সালিশ মানলেও পরে আর মানে না। পরে ২০১২ সালের ১৩ জুন গভীর রাতে ইছমত এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। পরে ইছমতের স্ত্রী মাজেদা আক্তার তাঁদের বিরুদ্ধে চান্দিনা থানা ও আদালতে তিনটি পৃথক অপহরণ, গুম ও হত্যার মামলা করেন। সর্বশেষ ২০১৪ সালে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার করার পর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তাঁদের গ্রেপ্তার করে। স্বীকারোক্তি আদায়ের জন্য রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন চালায়।
মামলার বিষয়ে ইছমতের স্ত্রী মাজেদা আক্তারের সঙ্গে কথা বলতে তাঁর বাড়ি গেলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। ইছমত আলীর সাথে কথা হয় চান্দিনা থানায় পুলিশ হেফাজতে। তিনি দাবি করেন, একদিন তাঁর বড় তাঁকে মারার চেষ্টা করলে তিনি মনের দুঃখে, রাগে-ক্ষোভে বাড়ি থেকে চলে যান। তিন মাস আগে তাঁর স্ত্রী তাঁর কাছে হবিগঞ্জে যান। ভাইয়ের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি তখনই তিনি জানতে পারেন। তাঁর স্ত্রী মামলা করে ভুল করেছেন বলে তিনি স্বীকার করেন।