লড়াই করেই হারল বাংলাদেশ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৩ মার্চ ২০১৫ ইং, ৬:৪৫ অপরাহ্ণ | সংবাদটি ৭৩৯ বার পঠিত
ডেইলি বিশ্বনাথ ডেক্স:: প্রাণপণ লড়াই করেও পারল না বাংলাদেশ। গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে নিউ জিল্যান্ডের কাছে ৩ উইকেটে হেরেছে তারা।
শুক্রবার হ্যামিল্টনের সেডন পার্কে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেটে ২৮৮ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে ৪৮ ওভার ৫ বলে ৭ উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় নিউ জিল্যান্ড।
বিপজ্জনক কোরি অ্যান্ডারসনকে বিদায় করে নিউ জিল্যান্ডকে অস্বস্তিতে ফেলেছেন নাসির হোসেন। এর আগে লুক রনকিকে বিদায় করে বাংলাদেশকে খেলায় ফেরান সাকিব আল হাসান।
পঞ্চম ওভারের প্রথম বলেই আঘাত হানেন সাকিব আল হাসান। এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে লংঅফে সৌম্য সরকারের তালুবন্দি হন ব্রেন্ডন ম্যাককালাম (৮)।
সাকিবের সেই ওভারের পঞ্চম বলে কাভারে তামিম ইকবালের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান কেন উইলিয়ামসন (১)।
মার্টিন গাপটিলকে ফিরিয়ে ১৩১ রানের জুটি ভাঙেন সাকিব আল হাসান। তার বল এগিয়ে এসে খেলেছিলেন শতক করা গাপটিল। তবে লংঅনে রুবেল হোসেনের তালুবন্দি হয়ে ফিরে যেতে হয় তাকে।
আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করা গ্র্যান্ট এলিয়টকে ফেরান রুবেল হোসেন। তার বলে সুইপার কাভারে তাসকিন আহমেদের ক্যাচে পরিণত হন এলিয়ট।
নাসির হোসেনের বলে এলবিডব্লিউর ফাঁদে পড়েন রস টেইলর। রিভিউ নিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু তাতে আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত পাল্টায়নি।
সাকিব আল হাসানের বলে সীমানায় নাসির হোসেনের ক্যাচে পরিণত হন লুক রনকি।
এর আগে শুক্রবার হ্যামিল্টনের সেডন পার্কে ‘এ’ গ্রুপের ম্যাচে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেটে ২৮৮ রান করে বাংলাদেশ। এবারের আসরে এই প্রথম কোনো দলকে অলআউট করতে ব্যর্থ হল অন্যতম ফেভারিট নিউ জিল্যান্ড।
ট্রেন্ট বোল্টের দারুণ বোলিংয়ে শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। তার সুইং ঠিক ভাবে সামলাতে না পেরে শুরুতেই ফিরে যান দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েস ও তামিম ইকবাল।
ষষ্ঠ ওভারে বোল্ড হয়ে যান ইমরুল। দশম ওভারে স্লিপে কোরি অ্যান্ডারসনের তালুবন্দি হন তামিম।
প্রথম ৭ ওভারে মাত্র ৮ রান সংগ্রহ করে বাংলাদেশ। তবে মাহমুদুল্লাহ ও সৌম্য সরকারের পাল্টা-আক্রমণে পরের ৭ ওভারে ৬২ রান যোগ করে তারা। বোল্টের করা ১৪তম ওভারে ১৭ রান নেন এই দুই ব্যাটসম্যান।
১৫তম ওভারে বল করতে আসেন ড্যানিয়েল ভেটোরি। এই স্পিনার আক্রমণে আসার পর বাংলাদেশের রানের গতিতে ভাটা পড়ে।
নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে এবারের আসরে কোনো দলই শতরানের জুটি গড়তে পারেনি। শতরানের জুটির খুব কাছে চলে গিয়েছিলেন সৌম্য-মাহমুদুল্লাহ। ক্যারিয়ারের প্রথম অর্ধশতকে পৌঁছে সৌম্যর বিদায়ে ভাঙে ৯০ রানের চমৎকার জুটি।
৫৮ বলে সৌম্যর ৫১ রানের দৃঢ়তা ভরা ইনিংসটি সাজানো ৭টি চারে।
নেমেই রানের গতি বাড়ানোর দিকে মনোযোগী ছিলেন সাকিব আল হাসান। নিয়মিত অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজার অনুপস্থিতিতে এই ম্যাচে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেয়া সাকিব ফিরেন কোরি অ্যান্ডারসনের অফস্টাম্পের অনেক বাইরের একটি বল তাড়া করতে গিয়ে।
রানের গতি বাড়াতে গিয়ে দ্রুত ফিরে যান বাংলাদেশের আরেক ব্যাটিং ভরসা মুশফিকুর রহিম। অ্যান্ডারসনের বল এগিয়ে এসে স্লিপের ওপর দিয়ে তুলে দিতে চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু অ্যান্ডারসনের স্লোয়ারটি তার ব্যাট ছুয়ে লুক রনকির গ্লাভসে জমা পড়ে।
সাকিব-মুশফিকের দ্রুত বিদায়ের কোনো প্রভাব বাংলাদেশ ইনিংসে পড়তে দেননি মাহমুদুল্লাহ-সাব্বির রহমান। মাত্র ৪৮ বলে ৭৮ রানের জুটি গড়েন এই দুই জনে।
গ্রান্ট এলিয়টের বলে ব্রেন্ডন ম্যাককালামের দারুণ এক ক্যাচে পরিণত হয়ে শেষ হয় সাব্বিরের ২৩ বলে খেলা ৪০ রানের ঝড়ো ইনিংসটি।
সেখান থেকে দলকে তিনশ’ রানের কাছাকাছি নিয়ে যান মাহমুদুল্লাহ-নাসির হোসেন। শেষ পর্যন্ত ১২৮ রানে অপরাজিত থাকেন মাহমুদুল্লাহ। তার ১২৩ বলের ইনিংসটি ১২টি চার ও ৩টি ছক্কা সমৃদ্ধ।
ইংল্যান্ডের বিপক্ষে আগের ম্যাচেই ক্যারিয়ারের প্রথম শতক পেয়েছিলেন মাহমুদুল্লাহ। বিশ্বকাপের ইতিহাসে বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে শতক করা এই ব্যাটসম্যান খেলেছিলেন ১০৩ রান দারুণ এক ইনিংস।
এবারের আসরে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে সর্বোচ্চ সংগ্রহ গড়া বাংলাদেশ শেষ ১০ ওভারে সংগ্রহ করে ১০৪ রান।