স্বামী নয় দাড়ি রেখেছেন স্ত্রী!
প্রকাশিত হয়েছে : ২৭ মার্চ ২০১৫ ইং, ৫:৪৯ অপরাহ্ণ | সংবাদটি ১২৩০ বার পঠিত
বিচিত্র ডেস্ক: পুরুষের গাল, থুতনি, এবং ওষ্ঠের ওপরের অংশে গজানো চুলকে বলা হয় দাড়ি। ‘দাড়ি’ সাধারণত পুরুষদের মুখেই শোভা পাবে এমনটিই প্রকৃতির নিয়ম। কিন্তু একজন নারীর মুখে পুরুষের মত লম্বা লম্বা দাড়ি, আর তাকে দেখতে অবিকল একজন শশ্রুমন্ডিত পুরুষের মতোই লাগছে এমন নারী সত্যি বিরল!
“আমি ভাবিনি যে, সে আমার মুখের অনাকাঙ্খিত দাড়িগুলো পছন্দ করবে। কিন্তু আমি জানি, আমার স্বামী আমাকে খুবই ভালোবাসে এবং এটিই সব কথার শেষ কথা।” কথাগুলো বলছিলেন আমেরিকার আন্নালিসা হ্যাকলেম্যান নামের একজন নারী যাকে দেখতে হুবহু একজন দাড়িওয়ালা পুরুষ বলেই মনে হয়। আর আন্না দাড়িওয়ালা একজন পুরুষের মতোই। তার গাল, থুতনি এবং ঠোটের নিচেও রয়েছে লম্বা লম্বা দাড়ি।
সংবাদমাধ্যম জানায়, মুখজুড়ে পুরুষালী লোম বা দাড়িওয়ালা, ক্যালিফোর্নিয়ার আন্নালিসা হ্যাকলেম্যান পেশায় একজন আলোকচিত্রী। তার বয়স যখন ১৩ ঠিক তখনই তার মুখাবয়জুড়ে অনাকাঙ্খিত লোম বা দাড়ির অস্থিত্য লক্ষ্য করা যায়।
ডায়াগনোসিসের পর জানা যায়, ‘পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম’ নামের একটি হরমোনজনিত সমস্যা আন্নালিসার মুখে অনাকাঙ্খিত দাড়ি গজানোর জন্য দায়ী।
এরপর থেকে আন্নার মা তার মেয়েকে আত্মবিশ্বাসী করতে লেজার হেয়ার রিমুভালের মাধ্যমে তার মুখের দাড়িগুলো অপসারণ করতেন। কিন্তু এ পদ্ধতি বেশি একটা কার্যকরী ছিল না।
আন্নার মুখের এ অনাকাঙ্খিত পুরুষালী লোমগুলো এক সময় তার স্বাভাবিক জীবন যাপনকে দুর্বিসহ করে তোলে। বাড়ির বাইরে বের হতে এমনকি বন্ধুদের কাছে বিব্রত না হতে আন্না নিজে কখনো কখনো দিনে দুইবার সেভ করতে শুরু করেন। কিন্তু আন্নার মুখে অনাকাঙ্খিত দাড়ির বিরুদ্ধে তার এ যুদ্ধ যেন কখনোই শেষ হবার নয়।
বেয়ার্ডসপ্রো নামের একটি স্পেশালিষ্ট ওয়েবসাইটকে দেয়া এক সাক্ষাতকারে আন্না জানায়, আমার মুখের এই দাড়িগুলো নিয়ে ভাবতে ভাবতে এক সময় আমি বাড়ির বাইরে যেতে ভয় পেতে শুরু করি। এমনকি কোথাও বেড়াতে যেতে বা বন্ধুদের সাথে আড্ডায়ও যেতাম না। কখনো কখনো এ অবস্থা এমন হতো যে, আমি ভয়ে অনেক সময় ধরে কাঁদতে থাকতাম এবং দীর্ঘ সময় স্বাভাবিক হতে পারতাম না।
চিকিৎসকদের মতে, নিজেকে নিয়ে অধিক দুশ্চিন্তা থেকে সৃষ্ট মানসিক এ রোগ ‘অ্যাগোরাফোবিয়ায় আক্রান্ত হয়েছিলেন আন্না।
এক পর্যায়ে আন্না মুখের দাড়িগুলোকে অনেকদিন বিরতি দিয়ে সেভ করতে শুরু করেন। এসময় দাড়িগুলো বেশ দীর্ঘকায় হয়ে যেত। কিন্তু তিনি যতদিন স্বস্তিবোধ করতেন তাদের সেভ করেতেন না।
আশার কথা হলো, ভয়ার্ত আর নিজেকে নিয়ে বিব্রত আন্নালিসা এখন তার মুখের অনাকাঙ্খিত দাড়ি নিয়ে পুরোপুরি স্বস্তিতে আছেন। আন্নার মুখের বিরক্তিকর দাড়ির বিষয়টি তার স্বামী ডেভিড ভালো মনেই মেনে নিয়েছেন। ডেভিড এবং আন্নার বিয়ের আট বছর চলছে। তারা এবার তাদের বিয়ের আট বছর উদযাপনও করেছেন।
আমেরিকার টিভি চ্যানেল টিএলসি’কে দেয়া এক সাক্ষাতকারে আন্না জানিয়েছেন, “একজন মেয়ের মুখে বিব্রতকর দাড়ির বিষয়টি একজন পুরুষ সহজে মেনে নেবে না। কিন্তু ডেভিড আমাকে এ ব্যাপারে খুবই সাহায্য করেছে এবং সে বিষয়টি খুব সহজেই মেনে নিয়েছে।”