কামারুজ্জামানের রিভিউ খারিজ মৃত্যুদণ্ড বহাল
প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ এপ্রিল ২০১৫ ইং, ১:৩৫ অপরাহ্ণ | সংবাদটি ৬৭৪ বার পঠিত
নিউজ ডেস্ক :: একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা কামারুজ্জামানের মামলায় আপিলের বিরুদ্ধে করা রিভিউ আবেদন খারিজ করে দিয়ে মৃত্যুদন্ড বহাল রেখেছে সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ।
চারিক আদালত তার বিরুদ্ধে মৃত্যুপরোয়ানা পাঠাণোর পরে যে কোন সময় ফাঁসি কার্যকর করতে পারবে সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষ।
রায় ঘোষণার পরে ট্রাইব্যুনালের প্রত্যাশিত রায় বহাল রয়েছে বলে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চীফ প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট গোলাম আরিফ টিপু।
মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় আপিলের চূড়ান্ত রায়ে সোমবার সকালে কামারুজ্জামানের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখায় সুপ্রীম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনের সাংবাদিকদের কাছে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি একথা বলেন।
টিপু বলেন, উচ্চ আদালতের এ রায়ে আমরা খুশি।এটাই ছিল আমাদের প্রত্যাশা।
এর আগে সোমবার সকাল ৯টা ৫ মিনিটের দিকে প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ কামারুজ্জামানের রিভিউ আবেদন রায়ে খারিজ করে দিয়ে মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন।
এ সময় আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে অ্যাটর্নিজেনারেল মাহবুবে আলম, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল মুরাদ রেজা ও মমতাজ উদ্দিন ফকির। অপরদিকে কামারুজ্জামানের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন, শিশির মনিরসহ প্রায় শতাধিক আইনজীবী।
এর ফলে ফাঁসির দড়িতেই ঝুলতে হচ্ছে জামায়াতের এই প্রভাবশালী নেতা। তবে রাষ্ট্রপতির নিকট ক্ষমা চাওয়ার সুযোগ পাবে মোহাম্মদ কামারুজ্জামান।
গতকাল ৫ এপ্রিল কামারুজ্জামানের করা রিভিউ আবেদনের উপর শুনানি করেন উভয় পক্ষ। এরপর রায়ের জন্য আজ দিন ধার্য করেছিলেন আপিল বিভাগ।
এর আগে গত ৯ মার্চ রিভিউ শুনানির জন্য কার্যতালিকায় এলেও আসামীপক্ষের আইনজীবীর সময়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে তা পিছিয়ে ১ এপ্রিল ধার্য করেন আপিল বিভাগ।
গত ৫ মার্চ আপিল বিভাগের সংশ্লিষ্ট শাখায় আপিল মামলার চূড়ান্ত পূর্ণাঙ্গ রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদনটি দাখিল করেন কামারুজ্জামানের আইনজীবীরা।
মোট ৭০৪ পৃষ্ঠার রিভিউ আবেদনে ৪৪টি যুক্তি দেখিয়ে কামারুজ্জামানের ফাঁসির আদেশ বাতিল ও তার খালাস চেয়েছেন আসামিপক্ষ।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি (বর্তমান প্রধান বিচারপতি) এসকে সিনহার নেতৃত্বে চার বিচারপতির একই বেঞ্চ কামারুজ্জামানের আপিল মামলার পূর্ণাঙ্গ রায় ঘোষণা করেন।
এরপর ১৯ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানসহ তিন বিচারপতি কামারুজ্জামানের মৃত্যু পরোয়ানায় স্বাক্ষর করেন। অন্য দুই বিচারপতি হচ্ছেন বিচারপতি মো. মুজিবুর রহমান মিয়া ও বিচারপতি শাহীনুর ইসলাম।
এরপর ট্রাইব্যুনালের রেজিস্ট্রার মুস্তাফিজুর রহমান মৃত্যু পরোয়ানা জারি করে আইজিপি (প্রিজন) এর বরাবরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, আইন মন্ত্রণালয়ের সচিব ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে পাঠান। পরে কারাগারে কামারুজ্জামানকে মৃত্যু পরোয়ানা পড়ে শোনানো হয়।
গত বছরের ৩ নভেম্বর কামারুজ্জামানকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২ এর দেওয়া ফাঁসির আদেশ বহাল রেখে সংক্ষিপ্ত আকারে চূড়ান্ত রায় দিয়েছিলেন আপিল বিভাগ।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় কামারুজ্জামানকে ২০১৩ সালের ৯ মে ফাঁসির আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২।