দাফনের চারদিন পর থানায় হাজির কিশোরী
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ এপ্রিল ২০১৫ ইং, ২:১৩ অপরাহ্ণ | সংবাদটি ১৭৯৫ বার পঠিত
নিউজ ডেস্ক :: এক কিশোরীর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধারের পর তাকে এক বাড়ির গৃহকর্মী হিসাবে সনাক্ত করে দাফনের চারদিনের মাথায় জানা গেল লাশ সনাক্তে ভুল হয়েছে।
তসলিমা আক্তার লিমা নামের ওই গৃহকর্মীকে শুক্রবার কোতোয়ালি থানায় নিয়ে আসেন নগরীর বকশিরহাটের ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী নুরুল হক।
গত সোমবার দুপুরে নগরীর কোতোয়ালি থানার টেরিবাজার এলাকায় একটি কালভার্টের নিচ থেকে আনুমানিক ১২ বছর বয়সী ওই কিশোরীর বস্তাবন্দি লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
কোতোয়ালি থানার এসআই মহিবুর রহমান জানান, পরিষ্কার বেগম নামে এক নারী ওই রাতেই চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে উদ্ধার হওয়া লাশটি তার ছোট বোনের মেয়ে তসলিমা আক্তার লিমার বলে শনাক্ত করেন।
পরদিন মেয়েটির মা হাসনা বেগমের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়। বুধবার লাশটি দাফন করা হয় চৈতন্য গলি কবরস্থানে।
এদিকে লিমা যে বাসায় কাজ করত, সেই বাসার গৃহকর্তা টেরিবাজারের ব্যবসায়ী শাহেদ উল্লাহ সাজু ও তার স্ত্রী সাজিয়া ইয়াসমিনকে আসামি করে মঙ্গলবার একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন মেয়েটির খালা পরিষ্কার বেগম। পরে পুলিশ সাজুকে গ্রেপ্তারও করে।
এরপর বৃহস্পতিবার স্থানীয় পত্রিকায় মেয়েটির ছবি প্রকাশিত হলে ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাজী নুরুল হক শুক্রবার সকালে লিমাকে নিয়ে থানায় আসেন।
লিমা বলে, সিলেটের নবীগঞ্জের বাড়ি থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে এসে খালা পরিষ্কার বেগম তাকে কদমমোবারক এলাকার এক বাসায় গৃহপরিচারিকার কাজে দেয়।
ওই বাসার লোকজন তাকে ঢাকায় তাদের এক আত্মীয়র বাসায় নিয়ে যায় এবং সেখানে প্রায় এক বছর কাজ করার পর কয়েক মাস আগে খালা তাকে আবারও চট্টগ্রামে নিয়ে আসেন।
চলতি মাসের শুরুতে পরিষ্কার বেগমই ব্যবসায়ী সাজুর বাসায় লিমার কাজের ব্যবস্থা করে দেন। কিন্তু আট দিন কাজ করার পর ওই বাসা থেকে চলে আসতে চায় এই কিশোরী।
গত ৮ এপ্রিল সাজুর স্ত্রী তাদের দোকানের কর্মচারী হানিফের মাধ্যমে লিমাকে নগরীর বৌ বাজার এলাকায় পরিষ্কার বেগমের বাসায় পাঠিয়ে দেন। কিছুদূর যাওয়ার পর নিজেই খালার বাসায় যেতে পারবে জানিয়ে হানিফকে বিদায় করে দেয় লিমা।
কিন্তু খালার বাসায় গেলে বকা খেতে হবে- এই ভয়ে কদমমোবারক এলাকায় আগে যে বাসায় লিমা কাজ করত সে বাসায় যাওয়ার চেষ্টা করে সে।
কিন্তু পথ হারিয়ে মিয়াখান নগর এলাকার বকশিরহাটের রাস্তায় কান্নাকাটি করার সময় একটি ভবনের দারোয়ান লিমাকে ভবন মালিক নুরুল হকের বাসায় নিয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার পত্রিকায় নিজের ছবি দেখে নুরুল হকের পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানায় লিমা। এরপর কাউন্সিলর তাকে নিয়ে থানায় আসেন।
কোতোয়ালি থানার এসআই উৎপল বড়ুয়া বলেন, “মেয়েটিকে এখন আদালতে পাঠিয়ে জবানবন্দি নেওয়া হবে। পরে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়ে আদালতে হত্যা মামলাটি নিষ্পত্তির আবেদন করা হবে।”সূত্র হেলো টুডে