বিশ্বনাথে খরার পর টানা বৃষ্টিতে নতুন সংকট
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ এপ্রিল ২০১৫ ইং, ১২:৫৫ অপরাহ্ণ | সংবাদটি ৬৪০ বার পঠিত
মোহাম্মদ আলী শিপন::সিলেটের বিশ্বনাথে এবার প্রায় ৭ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। সম্প্রতি কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাতের প্রভাবে বর্তমানে উপজেলার প্রায় সকল হাওরে দ্রুত ধান পাঁকতে শুরু করেছে। বর্তমানে উপজেলার সকল হাওরে বাতাসে দোলা দিচ্ছে সবুজ ধানের শিষ। জমিতে কাচা পাঁকা ধানের গন্ধ বিরাজ করছে। আগামী সপ্তাহে পুরোদমে ধান কাটার ধুম শুরু হবে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। সর্বত্র কৃষক-কৃষাণীরা এখন তাদের ফসল তুলার চূড়ান্ত প্রস্তুতি সারতে ব্যস্ত সময় অতিবাহিত করছেন। আবহাওয়া ও প্রকৃতি স্বাভাবিক থাকলে দীর্ঘ কয়েক মাসের খরার পরও সাম্প্রতিক বৃষ্টিপাতের ফলে সর্বত্র বাম্পার ফলন না হলেও ভাল ফলন হবে বলে আশাবাদী কৃষক ও সংশ্লিষ্ট কৃষি কর্মকর্তারা। তবে দীর্ঘ কয়েক মাসের খরার প্রভাবে ফসলের বেশ ক্ষয়ক্ষতি হলেও চলতি সপ্তাহে টানা বৃষ্টিপাতের কারণে উপজেলার কৃষকদের মধ্যে নতুন উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। বিশেষ করে আগেভাগে পাকতে শুরু করা ধান কাটা ও মাড়াইসহ অন্যান্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে চিন্তায় আছেন কৃষকরা।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৮টি ইউনিয়নে এবারের বোরো ধান উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক বেশী উৎপাদন হয়েছে এবং গত বছরের তুলনায় এবছর জমি আবাদও হয়েছে বেশী। এবারের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬২৮০ হেক্টর, কিন্তু আবাদ হয়েছে ৭৩৬০ হেক্টর। তন্মদ্বে উচ্চ ফলনশীল (উপসী) বি-আর ৩ ধান ১৬০ হেক্টর, বিআর-১৪ ধান ১২০ হেক্টর, বিআর-১৯ ধান ৯৬ হেক্টর, ব্রি-ধান ২৮ করা হয়েছে ৪৪৪২ হেক্টর, ব্রি-ধান ২৯ হয়েছে ১৬৪১ হেক্টর, ব্রি-ধান ৩৬ হয়েছে ১৭ হেক্টর, ব্রি-ধান ৪৫ হয়েছে ১২ হেক্টর, ব্রি-ধান-৫০ হয়েছে ১০০ হেক্টর, হাইব্রীড হয়েছে ২৪০ হেক্টর, এরই মধ্যে এসএল ৮.এইচ ১৪৪ হেক্টর, হিরা ৪০ হেক্টর, জাগরন ১৬ হেক্টর, সম্পদ ২৫ হেক্টর, বাম্পার ২ হেক্টর, ময়না ৩ হেক্টর, দোয়েল ৬ হেক্টর, টিয়া ৪ হেক্টর, স্থানীয় জাতের টেপি বোরো ২৪০ হেক্টর, খৈয়া বেরো ১৬০ হেক্টর। উপজেলা দৌলতপুর ইউনিয়নে হাওর ও বিলের সংখ্যা বেশী থাকায় এ ইউনিয়নে বেশী আবাদ করা হয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য চাউলধনী, গোয়াহরি গ্রামের বড় বিল, দূর্যাকাপন হাওর, দরঙ্গবিল। এছাড়া বিশ্বনাথ সদর ইউনিয়নের বেলার হাওর, ইকরাম বিল (পশ্চিম শ্বাসরাম) রামপাশা ইউনিয়নের নলিয়া বিল, রামচন্দ্রবিল, দোহাল বিল, উকলা বাধ, পাচলার খাল, ইলামেরগাঁও, লামাকাজী ইউনিয়নের হাজারাই বাধ, ভূরকির বিলে ব্যাপকহারে বোরো ধানের ভাল ফলন হয়েছে।
উপজেলার কারিকোনা গ্রামের কৃষক আবদুস শহিদ বলেন, বৃষ্টি হওয়ায় বোরো ফলন ভাল হয়েছে। তবে এভাবে যদি আরোও কয়েকদিন বৃষ্টি হয়,তাহলে বোরো ধানের অনেক ক্ষতি হবে।
বিশ্বনাথ ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন বলেন, দীর্ঘ খরার কারণে এ বছর অন্যান্য বছরের মত বাম্পার ফলন না হলেও ফসল ভাল হয়েছে। সুষ্ঠুভাবে ধান কাটা শেষ করতে পারলে এতেই কৃষকরা খুশি থাকবেন। তবে কয়েকদিনের টানা অতিবৃষ্টি নিয়ে কৃষকরা বেশ চিন্তায় আছেন।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আখতার আহমদ বলেন, মৌসুমের শেষ সময়ে হলেও বৃষ্টিপাত হওয়ায় ফসলের অনেক উপকার হয়েছে। দীর্ঘ খরা শেষে বিলম্বিত বৃষ্টিপাতের পরও অনেকাংশে বাম্পার ফলনের আশা করা যাচ্ছে।