বিশ্বনাথে সুরমা নদী এখন ফসলের মাঠ
প্রকাশিত হয়েছে : ১৯ এপ্রিল ২০১৫ ইং, ১১:১৯ পূর্বাহ্ণ | সংবাদটি ৮৩২ বার পঠিত
এমদাদুর রহমান মিলাদ: সিলেট সদর ও বিশ্বনাথ উপজেলার মধ্যদিয়ে প্রবাহিত সুরমা নদীর প্রায় ১০ কিলোমিটার অংশ খননের অভাবে ক্রমশ ভরাট হয়ে গেছে। এককালের খড়¯্রােতা সুরমা নদী এখন ফসলের মাঠ। একসময় নদীর এই দীর্ঘ অংশ জুড়ে পানির প্রচন্ড স্রোত থাকলেও এখন সেখানে পানি নেই। ‘‘মরা গাঙ’’ হিসেবে পরিচিত নদীর এই অংশে সুস্বাধু মাছের বংশও হারিয়ে গেছে। এর ফলে নদী তীরবর্তী প্রায় ২০ গ্রামের মানুষ মাছ ধরাসহ প্রাত্যহিক কাজকর্ম সম্পাদন এবং চাষাবাদের ক্ষেত্রে চরম দুর্ভোগের মুখে পড়েছেন। ঐ এলাকার প্রকৃতি এবং পরিবেশও বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। একসময় সুরমা নদীর এই অংশ প্রচন্ড স্রোতস্বীনি ছিল। স্রোত আর ঢেউ এর তান্ডবে নদী তীরবর্তী গ্রামগুলো চরম ভাঙ্গনের মুখে পড়ে। এ অবস্থায় প্রায় ৩০ বছর পূর্বে তৎকালীন সরকার ধনপুর থেকে হাউশা পর্যন্ত দুই কিলোমিটার বাইপাস নদী খনন করে। এর পর থেকে সুরমার মূল প্রবাহ বাইপাস দিয়ে চলে যায়। স্রোতহীন হয়ে পড়ে ধনপুর থেকে তিলকপুর পর্যন্ত প্রবাহিত সুরমা নদীর বিশাল অংশ। এর পর থেকে ক্রমশ পলি ভরাট হতে থাকে। বর্তমানে দীর্ঘ নদীর প্রায় ১০ কিলোমিটার অংশই ভরাট হয়ে গেছে।
সম্প্রতি সরেজমিনে পরিদর্শনে গেলে এলাকাবাসী জানান, পানির অভাবে দু’পারে সেচকাজ মারাত্মক ভাবে ব্যাহত হচ্ছে। ‘মরা গাঙ’ হিসেবে পরিচিত এই অংশে পানি না থাকায় মাছও নেই। ফলে মাছের উপর নির্ভরশীল অসংখ্য পরিবার দুর্ভোগে পড়েছে। ইতিমধ্যে অনেক জেলে পরিবার অন্যত্র চলে গেছে। বর্তমানে নদীর প্রায় পুরোটাই ভরাট হয়ে গেছে। সেখানে এখন ধান ও সবজি চাষ হচ্ছে এবং খেলার মাঠ ও গোচারণ ভূমি হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। নদীর অনেক স্থানে অবৈধ ভাবে নির্মাণ করা হয়েছে বাড়ি ঘর।
তারা জানান, নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ায় প্রতি বছর বর্ষায় পাহাড়ি ঢল এসেই সরাসরি পার্শ্ববর্তী বাড়িঘরে আঘাত হানে। ভাসিয়ে নিয়ে যায় ক্ষেতের ফসল, বাড়িঘর ও গাছপালা। এই অবস্থা থেকে বাঁচাতে শীঘ্রই নদীটি খননের দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী। নদীটি খনন করা হলে মাছের প্রজনন বাড়বে, শুকনো মৌসুমে সেচ সুবিধা বৃদ্ধি পাবে ও বর্ষায় অতিরিক্ত পানি ধারণ করবে। এতে পাহাড়ি ঢলের আঘাত থেকে রক্ষা পাবে বাড়িঘর। এর সাথে অবৈধ দখল প্রকৃয়া থেকেও রক্ষা পাবে নদীর বিস্তীর্ন ভূমি।
এব্যাপারে উপজেলার লামাকাজি ইউপি চেয়ারম্যান কবির হোসেন ধলা মিয়া বলেন, উপজেলার মাসিক সমন্বয় সভায় বিষয়টি নিয়ে অনেক বলেছি। কিন্তু কেউ কথা শুনেনা। নদীটি খনন হলে অসংখ্য মানুষ ফায়দা পেত। হেমন্তে দু’পারে সেচ সুবিধা নিয়ে ফসল উৎপাদন বেড়ে যেত।