`সাপ মানুষের শক্র নয় বন্ধু’
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ এপ্রিল ২০১৫ ইং, ৯:৫৮ অপরাহ্ণ | সংবাদটি ১৩২৭ বার পঠিত
উজ্জ্বল দাশ, ওসমানীনগরঃ শ্রষ্টার শ্রেষ্ট জীব মানুষ। সাপসহ অপরাপর প্রানী সমূহকে মানুষের কল্যানার্থে সৃষ্টি করা হয়েছে। পৃথিবীর এমন কোন প্রানী নেই যা মানুষের ক্ষতি করে। বরং মানুষই নিজের স্বার্থ হাসিলের লক্ষ্যে বিভিন্ন প্রানীকে ধংশ করে থাকে। সাপকে বিশাক্ত মনে করা হলেও কারন ছাড়া সাপ মানুষের ক্ষতি করে না। সাপ মানুষের চাইতে বিশাক্ত নয়। সাপ প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার পাশাপাশি মানুষের সম্পাদও রক্ষা করে থাকে। তাই সাপ মানুষের শক্র নয় বন্ধু বলে মন্তব্য করেন স্বর্পরাজ কবিরাজ ইব্রাহিম আলী ওঝা।
ভারতের আসাম রাজ্য থেকে এসে সম্প্রতি ওসমানীনগরের একাধিক স্থান থেকে বিষধর সাপ ধরতে আসলে তার সাথে আলাপ কালে তিনি উপরোল্লেখিত কথাগুলো বলেন। গত ৩০মার্চ তিনি ওসমানীনগরে আসেন। সম্প্রতি তিনি অগ্রনী ব্যাংক গোয়ালাবাজার শাখার এসির ভিতর থেকে পঙ্কি আলদ, কলাবাগান ও গোয়ালাবাজার সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ উপজেলার বিভিন্নস্থান থেকে ভিমরাজ, দুধরাজ, মাছুয়া আলদ, নগাই আলদ, কাল কেউটে, কেরেট আলদ, পঙ্কী আলদ, কিং কোবরা, কোবরা, ভাইপার, ক্লি কোবরা, ব্লাক কোবরা, গ্রীন ভাইপার, সূর্যমূখি পঞ্চনাগসহ বিভিন্ন জাতের বিশাক্ত সাপ ধরেছেন। আর এসব সাপ ধরতে সহযোগীতা করেছেন তার পুত্র আলমানুন ওঝা। । ইব্রাহিম আলী ওঝার আদি নিবাস ঢাকা সভার এলাকায় হলেও শিশুকাল থেকেই পরিবার পরিজনদের নিয়ে ভারতের আসাম রাজ্যে বসবাস করে আসছেন। বর্তমানে তিনি সুনামগঞ্জ সদর এলাকার সোনাপুর গ্রামে বসবাস করছেন।
প্রায় ৬০ বছর বয়সী স্বর্পরাজ কবিরাজ ইব্রাহিম আলী ওঝা জানান, দীর্ঘ ৩০ বছরের অভিজ্ঞতা থেকে সাপ সম্পর্কে ভালভাবে জানেন। বিভিন্ন প্রজাতির শাপ পোষলেও ইব্রাহিম আলী ওঝার মূখ্য কাজ হচ্ছে বিভিন্ন জাতের লতা-পাতা ও গাছগাছড়া দিয়ে বিভিন্ন রোগের ঔষধ তৈরী করে মানুষের উপকার করা। ইতিমধ্যে তিনি দেশের বিভিন্নস্থান ঘুরে বেরিয়েছেন। এবং বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে সরকারী ও বেসরকারী অসখ্য প্রসংসা পত্র অর্জন করেছেন, মানুষের উপকার করাই ধ্যান ও সাধনা বলে উল্লেখ করেন স্বর্পরাজ কবিরাজ ইব্রাহিম আলী ওঝা। তার দেওয়া বনজ ঔষুধ সেবন করে অনেক বিশিষ্ট ব্যাক্তিও সুফল পেয়েছেন বলে তিনি দাবী করেন। তিনি জানান, বনজ ঔষুধের গুনাবলী ও সাপ সম্পর্কে মানুষের অহেতুক ভয় দুর করতে তার পিতা ও শিক্ষাগুরু তাহের আলী ওঝার নির্দেশে তিনি দেশের বিভিন্নস্থান ঘুরে বেড়াচ্ছেন। পিতার কাছেই এ কাজের হাতে খড়ি স্বর্পরাজ কবিরাজ ইব্রাহিম আলী ওঝার। ২০ বছর বয়সে তিনি এ কাজে নিয়োজিত হন। দীর্ঘ ১২ বছর একাগ্রতার সঙ্গে সাধনা করে তিনি পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত এই পেশায় সফলতা অর্জন করেন।
সাপ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, কিছু সংখ্যক বিশধর শাপ রয়েছে যাদের ছোবলে অনেক সময় মানুষের মৃত্যু হয় তবে সাথে সাথে চিকিৎসা করালে বাঁচানো সম্ভব। সাপ মানুষকে সাধারনত ছোবল দেয়না সাপের শরীরে জোর আঘাত করলে আত্মরক্ষার জন্য সাপ ছোবল দেয়। শাপ প্রত্যেক বাড়িতে রাখাল হিসাবে থাকে, গ্রামাঞ্চলে এগুলোকে বাড়ি রাথাল বলা হয়। তাই সাপকে সর্বাবস্থায় বন্ধু বলে গন্য করার অনুরোধ করেন ইব্রাহিম ওঝা।
স্বর্পরাজ কবিরাজ ইব্রাহিম আলী ওঝা বলেন, সাপ ধরতে অনেক সময় বিপত্তির মধ্যেও পড়তে হয়। সাপকে যখন আমরা মন্ত্র বলে ডাক দেই তখন অনেক সময় সাপের মুখ থেকে আগুনসহ নানা ও রকমের বস্তু বের হয়। তাই আমাদের জীবন ঝুকি নিয়ে সাপ ধরতে হয়। বকসিস হিসাবে যে যা দেয় তা দিয়েই আমি আমার জীবিকা নির্বাহ করে থাকি। মানুষের সেবা করাই আমার প্রধান কাজ ও আমার উস্তাদের নির্দেশ। তাই যদি কেউ বিশধর সাপের কবলে পড়েন (০১৭৪৭-৩১৫৮৮১) নাম্বারে দয়া করে আমাকে ডাকবেন এটাই আমার অনুরোধ