লন্ডনে লুৎফুরের প্রার্থী সিলেটের মেয়ে রবিনা
প্রকাশিত হয়েছে : ০১ মে ২০১৫ ইং, ৬:৩৭ অপরাহ্ণ | সংবাদটি ১০৭১ বার পঠিত
রবাস ডেস্ক::ভোট জালিয়াতি স্বজনপ্রীতি ও তছরুপের অভিযোগে ব্রিটেনের আদালত প্রথম নির্বাচিত বাংলাদেশি মেয়র লুৎফুর রহমানকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেয়। দ্যা রয়েল কোর্ট অব জাস্টিসে টাওয়ার হ্যামলেটস ইলেকশন রায় প্রকাশের পর এই প্রথম পাবলিক মিটিংয়ে এসে বক্তব্য রাখেন লুৎফুর রহমান।
গত ২৩ এপ্রিল রায় ঘোষোনার পর বৃহস্পতিবার ‘ডিফেন্ড ডেমোক্রেসি ইন টাওয়ার হ্যামলেস’ শিরোনামে পাবলিং মিটিংয়ে সংবাদ মাধ্যমের সামনে আসেন সাবেক মেয়র লুতফুর রহমান। নানা ধর্ম বর্ণের কয়েক হাজার মানুষ তাঁকে সমর্থন দিতে এসে সমবেত হয়েছিলেন লন্ডনের ওয়াটার লিলি হলে।
আগামী ১১ জুন অনুষ্ঠিত টাওয়ার হ্যামলেটসের মেয়র নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসাবে কাউন্সিলর রবিনা খানের নাম ঘোষণা করেন লুৎফুর রহমান। একই সঙ্গে টাওয়ার হ্যামলেটস ইলেকশন মামলার রায়ের বিরুদ্ধে জুডিশিয়াল রিভিউর আবেদন করবেন বলেও ঘোষণা দেন তিনি।
বৃহস্পতিবারের জনসভায়ও লুৎফুর রহমানের সমর্থনে এসে বক্তব্য দেন লেবার পার্টির এনইসি মেম্বার ক্রিস্টিন শোক্রফ্ট, পিপল এসেম্বলির প্রতিনিধি জন রিস, ইউনাইট দ্যা ইউনিয়নের এন্ড্রো মারি, এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশী সলিসিটর্সের ফাউন্ডার চেয়ার সহুল আহমেদ, স্টপ ওয়ার দ্যা কোয়ালিশনের লিনসে জারম্যান, কমিউনিটি এক্টিভিস্ট সালমা ইয়াকুব, কে এম আবু তাহের চৌধুরী, গ্রেটার সিলেটের চেয়ার নুরুল ইসলাম মাহবুবসহ আরো অনেকে। জনসভায় ভিডিও বার্তার মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন জর্জ গ্যালওয়ে এমপি এবং সাবেক লন্ডন মেয়র কেন লিভিংস্টোন।
বক্তারা, ইলেকশান মামলার বিচারকের সমালোচনা করেন। রায় পক্ষপাতদুষ্ঠ বলেও মন্তব্য করেন কেউ কেউ। ব্রিটেনের প্রতিষ্ঠানিক বর্ণবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে বক্তারা কমিউনিটির সর্বস্তরের মানুষের প্রতি আহ্বান জানান। সভা থেকে এ রায়ের বিরুদ্ধে জুডিশিয়াল রিভিউতে যাওয়ার জন্য বক্তারা লুৎফুর রহমানের প্রতি পরামর্শ দেন। জুডিয়াল রায়ে যাওয়ার জন্য যে অর্থের প্রয়োজন, সে বিষয়টিও নজরে নিয়ে আসেন বক্তারা। একটি একাউন্টের মাধ্যমে জুডিশিয়াল রিভিউর জন্য অর্থ সংগ্রহ করার ঘোষণা দেয়া হয় সভা থেকে। লেবার পার্টির এনইসি মেম্বার ক্রিস্টিন শোক্রফ্ট একাউন্টটি দেখাশুনা করবেন বলেও সভায় ঘোষণা দেন তিনি।
লুৎফুর রহমান তাঁর দল টাওয়ার হ্যামলেট ফার্ষ্ট থেকে ১১ জুনের নির্বাচনে মেয়র প্রার্থী হিসাবে রবিনা খানের নাম ঘোষণা করেন। পর মঞ্চে এসে বক্তব্য রাখেন রবিনা। এ সময় তিনি গর্বের সঙ্গে বলেন, বাংলাদেশী হিসাবে, মুসলিম হিসাবে এবং ব্রিটিশ হিসাবে তিনি নিজে গর্ববোধ করেন। সাবেক মেয়র লুৎফুর রহমানের ভালো কাজগুলো অব্যাহত রাখতে তিনি সবার সহযোগিতা নিয়ে কাজ করে যাবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন। ২০১০ সালের অক্টোবরে লুৎফুর রহমানকে সমর্থনের কারণে লেবার পার্টি থেকে বহিস্কার হন। অবশ্য সেই থেকে তিনি লুৎফুর রহমানের সঙ্গেই আছেন। মেয়র নির্বাচনের পর থেকে কাউন্সিলের হাউসিং ক্যাবিনেট মেম্বার হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনেও শেডওয়েল থেকে পুননির্বাচিত হন তিনি। কেবিনেটে একই দায়িত্বে রয়েছেন এখনো।
সিলেটের মেয়ে রবিনা খান ৩ বছর বয়সে বিলাত এসেছিলেন। ১৯৯২ সালে বিয়ের পর টাওয়ার হ্যামলেটস আসেন। রাজনীতিতে সক্রিয় হওয়ার আগে লেখালেখি জগতে ছিলো তার ব্যস্ততা। তার লেখা রেইনবো হ্যান্ডস এবং আয়শাস রেইবো নামে দুটি উপন্যাস আছে বাজারে। এছাড়া চ্যানেল ফোরের টিএনফোর ম্যাগাজিনে প্রকাশিত হয়েছে ছোট গল্প ইফ বার্ডস কেন ফ্লাই। ২০১০ সালের নির্বাচনে লেবার পার্টি প্রার্থী হয়ে শেডওয়েল ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়ার আগে ক্রিয়েটিভ কনসালটেন্ট হিসাবে বিবিসি এবং আইটিভির সঙ্গে কাজ করেছেন। গণতন্ত্র রক্ষা ও লুতফুর রহমানের সমর্থনে সভাটি বর্ণবাদ ও ইসলামোফোবিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসাবেই মনে করছেন অনেকে।