বিশ্বনাথ রামপাশা ইউপি ভবনের কাজ ফেলে ঠিকাদার উধাও!
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ মে ২০১৫ ইং, ১০:২৩ পূর্বাহ্ণ | সংবাদটি ৫৮৭ বার পঠিত
এমদাদুর রহমান মিলাদ : বিশ্বনাথ উপজেলার রামপাশা ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স নির্মাণ কাজ প্রায় আড়াই বছর যাবৎ বন্ধ রয়েছে। ফলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে ইউনিয়নবাসীকে। এদিকে, স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার রয়েছেন উধাও। তবে ফান্ডে পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ না থাকায় নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা। জানা গেছে, এলজিইডি’র অর্থায়নে ৫০ শতক ভূমির উপর ৭৫ লাখ ৫৩ হাজার ১ শত ৭৫ টাকা ব্যয়ে ২০১২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘গ্লোবাল ট্রেডিং’ এর নামে রামপাশা ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স নির্মাণের ওয়ার্ক অর্ডার হয়। এরপর গ্লোবাল ট্রেডিং এর কাছ থেকে এক চুক্তির মাধ্যমে নির্মাণ কাজের দায়িত্ব নেয় ‘আসাদ এন্টার প্রাইজ’ নামক ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ২০১৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারী ঐ ভবন নির্মাণ কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন সিলেট-২ আসনের ততকালীন সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী। এরপর নির্মাণ কাজও শুরু হয়। ২০১৩ সালের ২০ মার্চ এর মধ্যে নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা থাকলেও কিছুদিন কাজ করার পর হাঠৎ করে বন্ধ হয়ে যায় নির্মাণ কাজ। এরপর থেকে উদাও হয়ে যান সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার আসাদ মিয়া। এদিকে, দীর্ঘদিন ধরে ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ থাকায় হতাশ রয়েছেন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা। ইউনিয়নবাসীর মনেও বিরাজ করছে ক্ষোভ।
এ ব্যাপারে রামপাশা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার খান বলেন, দীর্ঘ আড়াই বছর ধরে ভবনের নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারের মোবাইল ফোনও বন্ধ রয়েছে। তাকেও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে বার বার যোগাযোগ করেও কোন লাভ হচ্ছেনা। তিনি জানান, বর্তমানে পুরনো একটি ঘরে পরিষদের কার্যক্রম চলছে। চেয়ারম্যান ও সচিবকে এক রুমে বসেই কাজ করতে হয়। যে কোন বিচার-বৈঠক করতে হলে বাধ্য হয়ে চেয়ারম্যানের বাড়িতেই করতে হয়। ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স না থাকায় ইউনিয়নের ৪৫ হাজার জনগণকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তাই ভবনটির অসমাপ্ত কাজ দ্রুত শেষ করতে সরকারের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেন তিনি।
এ ব্যাপারে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘গ্লোবাল ট্রেডিং’ এর স্বত্বাধিকারী আখতার হোসেনের সাথে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি জানান, শুধু নামমাত্র ‘গ্লোবাল ট্রেডিং’ এর নামে কজের টেন্ডার করা হয়। কাজটি ওয়ার্ক অর্ডারের পর পাওয়ার অব অ্যাটর্নির মাধ্যমে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয় ‘আসাদ এন্টারপ্রাইজ’ কে। ঐ কাজে ‘গ্লোবাল ট্রেডিং’ এর কোন দায় দায়িত্ব নেই বলে তিনি জানান। আখতার হোসেন আরো বলেন, তার জানা মতে সরকারের সংশ্লিষ্ট তহবিল থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা উঠাতে না পারায় কাজটি সম্পন্ন করতে পারছেন না ঠিকাদার আসাদ। এই প্রকল্পের কত টাকা বিল এ পর্যন্ত উঠানো হয়েছে জানতে চাইলে আখতার হোসেন বলেন, তিনি শুনেছেন দুই ধাপে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা উঠানো হয়েছে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ‘আসাদ এন্টারপ্রাইজ’ এর স্বত্বাধিকারী আসাদ মিয়ার সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বারটিও বন্ধ রয়েছে।
এ ব্যাপারে বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মুহাম্মদ আসাদুল হক বলেন, সংশ্লিষ্ট ফান্ডের পর্যাপ্ত অর্থছাড় না থাকায় নির্মাণ কাজ আটকে আছে। বিষয়টি আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করেছি। তিনি বলেন, কমপ্লেক্সের নির্মাণ কাজ যদি সম্পন্ন করা হতো তাহলে ইউনিয়নের জনসাধারণ আরো উপকৃত হতেন।