মন খারাপ ইলিয়াসকন্যার
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ জুলাই ২০১৫ ইং, ২:৪৭ অপরাহ্ণ | সংবাদটি ৩৬৩৫ বার পঠিত
২০১২ সালের ১৭ এপ্রিল মধ্যরাতে মহাখালী ফ্লাইওভার সংলগ্ন সাউথ পয়েন্ট গলি থেকে নিখোঁজ হন এম ইলিয়াস আলী ও তার গাড়ির ড্রাইভার আনসার আলী। আজও তাদের সন্ধান মেলেনি। পরিবারের অভিযোগ, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীই ইলিয়াস আলী ও আনসারকে তুলে নিয়ে গেছে।
সম্প্রতি কথা হয় বাংলাদেশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ুয়া ইলিয়াস কন্যার সাথে। শুরুতেই কথা বলতে চায়নি সাইয়ারা নাওয়াল। পরে তার মা ইলিয়াসপত্নী তাহসিনা রুশদীর লুনার অনুরোধে কিছু সময় কথা হয়। সাইয়ারা জানায়, তার মা ঈদের জন্য কিছু নতুন জামা কিনে দিয়েছেন। ভাইয়ারাও নতুন জামাকাপড় নিয়েছে। এবার ঈদ সিলেটে দাদির সঙ্গে কাটানোর কথাও বলে ইলিয়াস কন্যা। ঈদের আগে বাবা ইলিয়াস আলীকে ফেরত পেতে সরকারের সহযোগিতা চায় সাইয়ারা নাওয়াল। সরকারের প্রতি তার আহ্বান, ‘আব্বুকে আমাদের মাঝে ফেরত দিন। আব্বুকে ছাড়া আমার কোনো কিছুই ভালো লাগে না। ঘুমুতে গেলেই স্বপ্নে আব্বুকে দেখতে পাই। কিন্তু ঘুম ভাঙলেই খুব কষ্ট হয়। নিজেকে অসহায় মনে হয়। আব্বুকে খুব মিস করছি।’
সাইয়ারা জানায়, ‘প্রতিদিন বাবার চুমু খেয়ে আমি স্কুলে যাই। বাবা নেই, আমি তার আদর থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। আমি অনুভব করি, আমার অসহায়ত্ব ও একাকিত্ব।’
বাবার সঙ্গে তোলা ছবিগুলোই তার এখন জীবন সঙ্গী। তার পরও বুকভরা আশা নিয়ে অপেক্ষায় সাইয়ারা নাওয়াল। মাস যায়, বছর যায় আব্বু ফিরে আসে না। তিন বছর শেষে চলে এসেছে আবারও ঈদুল ফিতর। বাবাকে ছাড়া এ ঈদও তার একাকিত্বে কাটবে বলে সে জানায়। এবার ঈদ কার্ডে সাইয়ারা নাওয়াল বাবাকে লিখেছে, ‘তোমাকে ছাড়া নিঃসঙ্গতা কাটে না বাবা। আমি খুবই অসহায়। তুমি ফিরে এসো।’
এদিকে নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই চরম উদ্বেগ আর উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে ইলিয়াস পরিবারের। ইলিয়াসপত্নী তাহসিনা রুশদীর লুনা দুই ছেলে ও একমাত্র মেয়েকে নিয়ে জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। সিলেটে ইলিয়াসের বৃদ্ধা মা সূর্যবান বিবিরও বুকভরা আর্তনাদ আর হাহাকারে সময় কাটছে। তাই শাশুড়ির সঙ্গেই ঈদ কাটানোর কথা জানালেন তাহসিনা রুশদীর লুনা। তিনি বলেন, ছেলেমেয়েদের নিয়ে সিলেটে ঈদ কাটাব। সেখানে নেতা-কর্মীদের সঙ্গেও দেখা-সাক্ষাৎ হবে। বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহউদ্দিনের মতো ইলিয়াসকেও খুঁজে পাওয়ার আশায় প্রতিটি দিন কাটে তাহসিনা রুশদীর লুনার। তিনি সরকারসহ সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান, আমার স্বামীকে অক্ষত অবস্থায় ফিরিয়ে দিন। ছেলেমেয়েদের মুখের দিকে তাকিয়ে তাকে ফেরত দিন।