পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন আসছে
প্রকাশিত হয়েছে : ০৪ জুলাই ২০১৫ ইং, ৯:১৪ অপরাহ্ণ | সংবাদটি ১১৩০ বার পঠিত
নিউজ ডেক্স:: আসন্ন পৌরসভা ও ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি নিয়ে ব্যস্ত নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চলতি বছরের শেষে বা আগামী বছরের শুরুতে এসব নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য আগাম প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়। এ ক্ষেত্রে নভম্বের বা ডিসেম্বরে এসব নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হতে পারে। এদিকে ২৬১ পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চেয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগকে চিঠি দিয়েছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়।
জানা গেছে, চলতি বছরের নভেম্বরেই মেয়াদ শেষ হচ্ছে এসব পৌরসভার। তাই আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে সারা দেশের ২৬১ পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠানের আইনি বাধ্যবাধকতা রয়েছে। এ ছাড়া চলতি বছরের অক্টোবর থেকে নির্বাচনের উপযোগী হচ্ছে সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন পরিষদ। আগামী বছরের জুনের মধ্যে এসব ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সম্পন্ন করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। এ জন্য আগাম প্রস্তুতির কাজ চলছে বলে জানিয়েছেন ইসি কর্মকর্তারা। সব মিলিয়ে ইসির নির্বাচনী ক্যালেন্ডারে আগামী বছর জুড়েই থাকবে স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন নির্বাচন।
এদিকে নতুন অর্থবছরে ইসির জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে অনুন্নয়ন খাতে ৫১২ কোটি ৩৬ লাখ টাকা এবং উন্নয়ন খাতে ৯৬৪ কোটি ৫৬ লাখ টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এর মধ্যে প্রস্তাবিত বাজেটে নির্বাচন খাতে ৩২১ কোটি ৪৩ লাখ ৭৬ হাজার টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। ইসি কর্মকর্তারা জানান, আগামী অর্থবছরে দেশজুড়ে সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন পরিষদ ও তিন শতাধিক পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ সময় স্থানীয় সরকারের কিছু উপনির্বাচনও অনুষ্ঠিত হবে। আসন্ন পৌরসভা নির্বাচন সম্পর্কে জানতে চাওয়া হলে নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বলেন, কোন সময় কতগুলো পৌরসভা নির্বাচন করা যায়, তা নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা চলছে। নির্বাচনের বিষয়ে সুস্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি এখনো। পৌরসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক না হলেও সম্ভাব্য প্রার্থীরা নানাভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। ঈদ ও রোজার শুভেচ্ছা জানিয়ে বিভিন্ন এলাকায় পোস্টার ও ব্যানার সাঁটিয়েছেন তারা। পাশাপাশি তৃণমূল পর্যায়ের নানা উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে জনসংযোগ, দলীয় ও স্থানীয় সভা-সমাবেশ এবং সামাজিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিচ্ছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। পাশাপাশি দলীয় সমর্থন পেতে আগেভাগেই স্থানীয় সংসদ সদস্য ও সিনিয়র নেতাদের আস্থাভাজন হওয়ারও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রার্থীরা।
নির্বাচন শাখার কর্মকর্তারা জানান, প্রতিটি নির্বাচনের আগাম প্রস্তুতি নিতে হয়। এর অংশ হিসেবে পৌরসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছেন তারা। ইতিমধ্যে নির্বাচনযোগ্য পৌরসভাগুলোর একটি তালিকা তৈরি করে কমিশনকে দিয়েছেন তারা। এ ছাড়া স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কাছে পৌরসভার তালিকা চাওয়া হয়েছে। ওই তালিকা পাওয়ার পর কোন কোন পৌরসভা নির্বাচন করার উপযোগী হবে তা নির্ধারণ করা হবে।
নভেম্বরে নির্বাচন উপযোগী : চলতি বছরের নভেম্বর থেকে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে সারা দেশে ২৬১ পৌরসভায় নির্বাচন করতে হবে ইসিকে। সারা দেশে ৩১৭টির মধ্যে নভেম্বর থেকে ২৬১ পৌরসভা নির্বাচন করার উপযোগী হবে বলে জানিয়েছে ইসি। ১২ জানুয়ারি ২০১১ থেকে ১৮ জানুয়ারি ২০১১ পর্যন্ত এসব পৌরসভায় নির্বাচন হয়েছিল। এসব পৌরসভায় প্রথম সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথম ও দ্বিতীয় সপ্তাহে। সে হিসাব অনুযায়ী পূর্ববর্তী ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করার বিধান রয়েছে। তথা আগামী নভেম্বর মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারির মধ্যে এসব পৌরসভায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ ক্ষেত্রে কমিশন আগামী বছরের শুরুতে এসব নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রাথমিক পরিকল্পনা নিয়েছে।
অক্টোবরে ইউপি : চলতি বছরের অক্টোবর থেকে আগামী বছরের জুনের মধ্যে সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন সম্পন্ন করার পরিকল্পনা করেছে ইসি। স্থানীয় সরকারের সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ এই নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে সম্প্রতি প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমেদ বলেন, মামলাসহ সব ধরনের জটিলতা দূর করে এ নির্বাচন দেওয়া হবে। ২০১১ সালের মার্চে শুরু হয়ে জুনের মধ্যে সম্পন্ন হয় চার হাজার ৫০১টি ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন। স্থানীয় সরকার (ইউনিয়ন পরিষদ) আইন, ২০০৯-এ বলা আছে, পরিষদ গঠনের জন্য কোনো সাধারণ নির্বাচন ওই পরিষদের জন্য অনুষ্ঠিত পূর্ববর্তী সাধারণ নির্বাচনের তারিখ থেকে পাঁচ বছর পূর্ণ হওয়ার ১৮০ দিনের (ছয় মাস) মধ্যে অনুষ্ঠিত হবে। অতএব ২০১১ সালের মার্চে যেসব ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, সেগুলো এ বছরের অক্টোবরের পর নির্বাচন উপযোগী হবে। আর বাকি ইউনিয়ন পরিষদগুলোর নির্বাচন ২০১৬ সালের জানুয়ারি থেকে করা যাবে।