ফেলানী আমায় ক্ষমা কর
প্রকাশিত হয়েছে : ০৯ জানুয়ারি ২০১৬ ইং, ৩:৪৮ অপরাহ্ণ | সংবাদটি ২১০২ বার পঠিত
মোহাম্মদ জুনেদ আহমেদ :: ৭ই জানুয়ারি ফেলানী দিবস। আমরা কয়জন মনে রেখেছি মর্মস্পর্শী শোক গাঁতা এই দিনটিকে ! ২০১১ সালের এই দিনে এশিয়ার বধ্যভূমিখ্যাত বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে সংঘটিত হয় ইতিহাসের এক নারকীয় হত্যাকান্ড। কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) দিন দূপুরে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তের গ্রামের মানুষর সামনে পরিকল্পিতভাবে বাংলাদেশী নিরপরাধ কিশোরী ফেলানী খাতুনকে গুলি করে হত্যা করে। এরপর তার নিথর দেহ কাঁটাতারের সঙ্গে পাঁচ ঘন্টারও বেশী সময় ঝুলিয়ে রাখা হয়। বিএসএফ লাশ নামিয়ে ভারতের কুচবিহারে নিয়ে যায়। পানি পানি বলে নিরপরাধ ফেলানীর চিতকার গলেনি খুনি বি এস এফ এর মন। পানির জন্য ফেলানীর আর্তনাদ , ফেলানীর জন্য কেদেছে বিশ্ববাসি, কেদেছে সারাদেশ । কাদেনি শুধু পরগাছা রাজনিতিবিদদের মন। ফেলানীর বিয়ে ঠিক হয়েছিল সীমানার ওপারের ফুফাত ভাইয়ের সাথে , সীমানার এপার ওপার ওদের কাছে যেন একপার। ইন্ডিয়ার ব্রডার আছে পাকিস্তানের সাথে , চায়নার সাথে , নেপালের সাথে আর আমাদের সাথে কিন্তু মানুষ মারা যায় শুধু বাংলাদেশ ব্রডারে ! পৃথিবীর সবচেয়ে প্রান ঘাতী ব্রডার ইন্ডিয়া বাংলাদেশ ব্রডার । কিন্তু কে ১৭ কোটি বাংলাদেশির পক্ষ থেকে এ প্রশ্ন করবেন ভারতকে? যিনি প্রশ্ন করেছিলেন মেজর জেনারেল এ এল এম ফজলুর রহমান বি ডি আর মহা পরিচালক থাকা অবস্থায় এপ্রিল ২০০১ এ রৌমারী , পাদুয়া সীমান্তে ৩০০বি এস এফ এর সাথে লড়ে অবৈধ আক্রমণ ঠেকিয়ে ভারতকে পরাজিত করে , বিজয় ছিনিয়ে এনেছিল মাত্র ১৭ জন বি ডি আর । তারা আজ কোথায় । এক সরকার বি ডি আর মহা পরিচালকে পদচুত্য করল। তার পররের সরকার পরিবর্তনের পর চাকরিচুত্য করল। বন্ধু রাষ্ট্র বলে , তাই যদি হয় যুদ্ধ ছাড়া সীমান্ত হত্যা পৃথিবীর কোথাও এমন নজির নেই । কেন বাংলাদেশের প্রতি ইন্ডিয়ার এই মনোভাব ? আমরা ত আমাদের সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু রাষ্ট্র দ্বারা বেষ্টিত ! বন্ধু কি বড় ভাই এর ভূমিকায় নয়? আরকত ফেলানী খুন হলে বন্ধু রাষ্ট্রকে প্রতিবাদ করবেন ? আর কত রক্ত চাই আপনাদের দয়াকরে বলবেন কি? এই স্বাধীনতার জন্যই কি আমাদের তিন লক্ষ লোক জীবন উৎসর্গ করেছিল, হাজার হাজার বিরংগনা ইজ্জত দিয়েছেন। বাংলাদেশ জন্মের সময় বন্ধুত্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যটা কি বুজতে আনেক বড় জ্ঞানী হতে হবে ? আমাদের মেরুদণ্ডহীন পরগাছা রাজনিতিবিদদের কবে সুমতি হবে? স্বাধীনতার ৪৩ বছর হয়ে গেল , বাংলাদেশ কি কাজী নজরুলের কান্ডারীর মুখ দেখবেনা? কবে বাংলাদেশে সালাউদ্দিন আউয়ুবির জন্ম হবে? আমাদের মেরুদণ্ডহীন পরগাছা রাজনিতিবিদদের কবে সুমতি হবে? এই ইংরেজি নতুন বছরে একটাই শুধু প্রত্যাশা বাংলাদেশে যেন একজন দেশপ্রেমিকের আবির্ভাব হয় । যে কি না এসে দূর্নিতি বন্ধ করবে , আইনের শাষন প্রতষ্টা করবে, সীমান্তে হত্যা বন্ধ করবে। সীমান্তে হত্যা বন্ধে প্রয়োজনে আরেকটি যুদ্ধ হবে। দেশের জন্য স্বাধীনতা রক্ষার প্রয়োজনে আবার বুকের তাজা রক্ত দেব। লেখক অনলাইন এক্টিভিষ্ট – মোহাম্মদ জুনেদ আহমেদ Ahmed.syl@gmail.com