বিশ্বনাথে বন্যায় পানিবন্দি অর্ধলক্ষ মানুষ, পানির নিচে ঘরবাড়ি-সড়ক
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ জুন ২০২৪ ইং, ৮:১০ অপরাহ্ণ | সংবাদটি ১৩৭ বার পঠিত
মোহাম্মদ আলী শিপন:: সিলেটের বিশ্বনাথে পাহাড়ি টানা বৃষ্টির ফলে দিন দিন পানি বৃদ্ধি পেয়ে বন্যায় রুপ নিয়েছে। উপজেলার আটটি ইউনিয়নের শতাধিক গ্রামের প্রায় অর্ধলক্ষ অর্ধলাখ মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছেন। গত রবিবার রাত থেকে টানা বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা ঢলে বন্যা পরি¯ি’তি মারাত্মক অবনতির দিকে যা”েছ। সুরমা, কুশিয়ারা, বাসিয়া, মাকুন্দা নদীসহ বিভিন্ন নদীর পানি হু হু করে বাড়ছে। মঙ্গলবার বিকেল ৫টা পর্যন্ত বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে। এভাবে যদি বৃষ্টি আরোও দুই-একদিন অব্যাহত থাকলে উপজেলায় ভয়াবহ বন্যায় রূপ নিতে পারে বলে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতিমধ্যে বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে গু”ছ গ্রামসহ অসংখ্য ঘরবাড়ি, পুকুর, শিক্ষা ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ, কমিউনিটি ক্লিনিক, ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়, মসজিদ, মন্দির এবং গ্রামীণ কাঁচা-পাকা সড়ক। উপজেলা সদরের সঙ্গে বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের যোগাযোগ বি”িছন্ন হয়ে পড়েছে। প্রত্যন্ত অঞ্চলের কৃষক ও খামারিরা তাদের গবাদিপশু, ধান, গোখাদ্য নিয়ে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। নিচু এলাকার শতাধিক পরিবার বাড়িঘর ফেলে জীবন বাঁচাতে নিরাপদ উঁচু ¯’ানে আশ্রয়ের সন্ধানে ছুটছেন। বৃষ্টি ও পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় পানিবন্দি লোকজন আতঙ্কে মধ্যে রয়েছেন।
উপজেলা প্রশাসনের সূত্রে জানাগেছে, উপজেলা ৮ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মধ্যে ৬ ইউনিয়নের ৫১ টি গ্রামের প্রায় ১৪ হাজার ৩৪৯ জন মানুষ বন্যায় আক্রান্ত হয়েছেন।
তবে, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, উপজেলার প্রায় সবকটি ইউনিয়নের প্রায় শতাধিক গ্রাম বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। এতে প্রায় অর্ধলাক মানুষ পানিবন্দি রয়েছেন।
মঙ্গলবার বিকেলে সরেজমিনে ঘুরে উপজেলার লামাকাজি, খাজাঞ্চি, দশঘর, দেওকলস ইউনিয়নের অধিকাংশ গ্রাম ও দৌলতপুর, রামপাশা, অলংকারী, বিশ্বনাথ ইউনিয়ন এবং বিশ্বনাথ পৌরসভার আংশিক এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
এদিকে বিশ্বনাথ-বাইপাস রোড, বৈরাগী-সিংগেরকাছ রোড, রামপাশা-লামাকাজী সড়কে বেশ ¯’ানে পানি উঠেছে। এছাড়া হাবড়া-ছালিয়া, বাগিছা-গোদামগাট সড়ক, খাজাঞ্চি-কামাল বাজার সড়ক ডুবে যাওয়ায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি উপজেলার অসংখ্য গ্রামীণ সড়ক বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে।
এদিকে, বন্য পরি¯ি’তি মোকাবেলায় ৫৮টি আশ্রকেন্দ্র প্র¯‘ত করা হয়েছে। ইতিমধ্যে শতাধিক মানুষ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছেন।
এছাড়া মঙ্গলবার বিকেলে বন্যাকবলিত এলাকা ও বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছেন প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসং¯’ প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী এমপি। ইতিমধ্যে উপজেলায় ৫২ মে. টন চাল বিতরন করা হয়েছে। ঈদের দিন থেকে শুকনা খাবার, শিশু খাদ্য, স্যালাইন, পানি বিশুদ্ধকরন ট্যাবলেট ও গো খাদ্য বিতরন অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছেন পিআইও প্রজেশ চন্দ্র দাশ।
এব্যাপারে উপজেলার লামাকাজি ইউপি চেয়ারস্যান কবির হোসেন ধলা মিয়া বলেন, সুরমা নদীর পাড় ভেঙে পানি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে প্রবেশ অব্যাহত রয়েছে। ইউনিয়নের বেশিরভাগ মানুষ পানি বন্ধি হয়ে পড়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহিনা আক্তার জানান, বন্যায় কবলিত এলাকাগুলোতে সরেজমিনে গিয়ে খোঁজ খবর নি”িছ। বন্যা পরি¯ি’তি মোকাবিলায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে সব ধরনের প্র¯‘তি নেয়া হয়েছে। খাদ্য সহায়তাও অব্যাহত রয়েছে।
উপজেলা পরিষদের নব-নির্বাচিত চেয়ারম্যান সুহেল আহমদ চৌধুরী বলেন, উপজেলার বেশিরভাগ মানুষ পানিবন্ধি হয়ে পড়েছেন। প্রতিনিয়ত তাদের খোজ খবর নি”িছ। পানিবন্ধি মানুষদের আশ্রয় কেন্দ্রে উঠার জন্য তিনি আহবান জানান। সরকারের পাশাপাশি-প্রবাসী ও এলাকার বিত্তবানদের বন্যার্ত মানুষের পাশে দাড়াঁনোর আহবান জানান তিনি।