বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলার লক্ষ্যে বিশ্বনাথে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার প্রেস ব্রিফিং
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ জুন ২০২৪ ইং, ১১:২৩ অপরাহ্ণ | সংবাদটি ২১৮ বার পঠিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
সিলেটের বিশ্বনাথে ‘অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে’ সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলার লক্ষ্যে শনিবার (২২ জুন) দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. দেলোয়ার হোসেন সুমনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত প্রেস ব্রিফিয়ে তিনি বলেন, গত বৃহস্পতিবার (২০ জুন) স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বন্যা কবলিত মানুষের আশ্রয় নিয়ে সৃষ্ট ঘটনাটি ছিল অনাকাঙ্খিত একটি ঘটনা। মূলত আমাকে (সুমন)’সহ হাসপাতালে দায়িত্ব পালনকারীদেরকে হেয়পতিপন্ন করার জন্য একটি সিন্ডিকেট কাজ করছে। আর এখন এঘটনাটিকে কেন্দ্র ওই চক্রটি আমার উপর মিথ্যা বানোয়াট, পরিকল্পিত ও উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে নানান অভিযোগ তুলছে।
প্রেস ব্রিফিয়ে ডা. দেলোয়ার হোসেন সুমন বলেন, অতীতে একটি গোষ্টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সেকে ঘিরে সিন্ডিকেট তৈরী করে হাসপাতালের ঔষধ বিক্রিসহ নানান সুবিধা আদায় করত। এর পাশাপাশি মাস্টার রুলে ওই এলাকার কয়েক জন চাকরিরত অবস্থায় অনিয়মের সাথে জড়িত ছিল। তাই তাদেরকে চাকরিচ্যুত ও সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দেয়ায় এখন তারা সঙ্গবদ্ধ হয়ে আমি’সহ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে নানান কুৎসা রটনা করছে। তিনি আরোও বলেন, উপজেলার লামাকাজী ইউনিয়নের বন্যার্তদের জন্য সেই ইউনিয়নে ১২টি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে। অথচ সেই সব আশ্রয় কেন্দ্রে না গিয়ে লামাকাজী ইউনিয়নের কিছু মানুষ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে আশ্রয় নিতে চান, এতেই প্রমাণ হয় বিষয়টি উদ্দেশ্য প্রণোদিত। এছাড়া রামপাশা ইউনিয়নের বাসিন্দাদের জন্য ১১টি আশ্রয় কেন্দ্র ঘোষণা করা হয়েছে। আর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মাত্র একশ গজ দূরে শাহজালাল পল্লী পরিষদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে আশ্রয় কেন্দ্র হিসেবে প্রস্তুত করা হয়। অথচ চকরামপ্রসাদ গ্রামের কিছু বন্যার্ত মানুষ ওই স্কুলে আশ্রয় নিবেন। অথচ তারা সেই আশ্রয় কেন্দ্র ফাঁকা রেখে তারা গ্যাস সিলিন্ডার সাথে নিয়ে কেন হাসপাতালে উঠবেন। আমার সাথে আলাপ না করেই ওই সিন্ডিকেট সংঘবদ্ধ চক্রটি স্থানীয় ইউপি সদস্য আফিজ আলীকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে এটা করেছেন।
স্থানীয় সাংবাদিকদের নানান প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বানভাসী পরিবারের সাথে কোন খারাপ আচরণ করা হয় নি। তাদেরকে বিনয়ের সাথে বলা হয়েছে যে এটা আশ্রয় কেন্দ্র নয়, তাছাড়া এখানে বিদ্যুৎ ও পানির সমস্যাও রয়েছে। বরং তারা আমাদের কোন কথাই শুনতে বা মানতে রাজি হননি। উল্টো তাদের পক্ষ হয়ে স্থানীয় মেম্বার ও কিছু লোকজন নিয়ে একটা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইছিলেন। এছাড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের নতুন বিল্ডিংয়ে বেশ কিছুদিন ধরে বিদ্যুতের সমস্যা এজন্য ৩য় তলার সেই কক্ষটি তালা দেয়া হয়েছে ঈদের আগে। বিদ্যুৎতের সমস্যা থাকায় মোটর দিয়ে পানিও তোলা যাচ্ছে না। তাই বাথরুমে পানিও ছিল না।
এব্যাপারে অভিযুক্ত রামপাশা ইউনিয়ন পরিষদের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার আফিজ আলী বলেন, টিএইচও ডা. সুমনের সাথে বন্যার্তরা আশ্রয় নেওয়ার পূর্বেই অনেক বার কথা বলেছি। তারপরও ওনি যখন তাদেরকে গালিগালাজ করে জোরপূর্বকভাবে বের করে দিতে যাচ্ছিলেন, আমি তখন তার কাছে এব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য এক ঘন্টা সময় দেওয়ার দাবী করেছি। কিন্তু তিনি আমার কোন কথা শুনেন নি, বরং আমাকে হুমকিও দিয়েছেন। ওইদিনের ঘটনার পুরো ভিডিও আমার কাছে আছে।
উল্লেখ্য, গত বৃহস্পতিবার (২০ জুন) রাতে বন্যায় কবলিত উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের চকরামপ্রসাদ গ্রামের কিছু বন্যার্ত পরিবার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আশ্রয় নিতে এলে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. দেলোয়ার হোসেন সুমন প্রায় অর্ধশতাধিক বন্যার্ত মানুষকে আশ্রয় না দিয়ে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং সেখানকার পানি-বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ ও বাথরুমে তালা দিয়ে চলে যান বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এরপর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিনা আক্তারের হস্তক্ষেপে ওই পরিবারগুলোকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পার্শ্ববর্তি ‘শাহজালাল পল্লী পরিষদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’ আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় দেন। এনিয়ে গত দু’দিন ধরে এলাকায় চরম উত্তেচনা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।