শিগগিরই বিশ্বনাথ যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষনা, কারা আসছেন নেতৃত্বে
প্রকাশিত হয়েছে : ২৫ জুন ২০২৫ ইং, ১২:৩১ পূর্বাহ্ণ | সংবাদটি ২৮ বার পঠিত
মোহাম্মদ আলী শিপন:: কেন্দ্রীয় যুবদলের নির্দেশে শিগগিরই ঘোষনা হতে যাচ্ছে সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা যুবদলের আহবায়ক কমিটি ভেঙে নতুন পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন। যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘিরে সরগরম সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলা যুবদল। উপজেলা যুবদলের নতুন নেতৃত্বে কারা আসছেন তা নিয়ে চলছে ব্যাপক আলোচনা। দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন পদপ্রত্যাশীরা। তদবির নিয়ে কড়া নাড়ছেন শীর্ষ নেতাদের দরজায়। স্বচ্ছ ইমেজের নেতাদের পাশাপাশি নেতৃত্ব পেতে ছুটোছুটি করছেন বিতর্কিতরাও। উপজেলা যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন নিয়ে তোড়জোড় শুরু হয়েছে। দেশ-বিদেশে চলছে লবিং। যারা আহবায়ক কমিটিতে স্থান পাননি তারা এখন যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে স্থান পেতে জোর লবিং শুরু করেছেন।
এদিকে উপজেলা যুবদলের কমিটিতে স্থান পেতে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেছেন অনেকেই। দলের বিরোধীতাকারী কাউকে নতুন কমিটিতে স্থান না দিতে এবং যুবদলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পদপ্রার্থী নেতাদের জীবনবৃত্তান্ত, দলীয় কর্মকান্ডে ভূমিকা, তৃণমূলে যাদের গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে যাচাই-বাছাই করে এমন নেতাদের কমিটিতে দায়িত্ব দিতে জেলা যুবদলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন উপজেলা যুবদলের পদপ্রত্যাশী ও তৃণমূল নেতাকর্মীরা। যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রাণচঞ্চলতা ফিরে এসেছে। কমিটিতে দলের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করা হবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। কারা আসছেন উপজেলা যুবদলের দায়িত্বে এ নিয়ে যুবদল নেতাকর্মীর মধ্যে চলছে ব্যাপক আলাপ-আলোচনা। এবার নতুন কমিটি গঠন হলে উপজেলা যুবদল আরও চাঙা হবে বলে জানিয়েছেন তৃণমূল নেতাকর্মীরা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী এক মাসের মধ্যে সিলেট জেলার আওতাধীন সকল ইউনিট গঠনের নির্দেশ প্রদান করেছে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি। গত শুক্রবার কেন্দ্রীয় সহ-দপ্তর সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম ভূঁইয়া স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে সিলেট জেলার আওতাধীন ১৩টি উপজেলার পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়া হয়। যুবদল কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নুরুল ইসলাম নয়ন সিলেট জেলা শাখার সভাপতি ও সম্পাদককে এ নির্দেশনা প্রদান করেন বলে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বিশ্বনাথ উপজেলা যুবদলের নেতারা জানিয়েছেন, ২০২১ সালের ৯ ফেব্রæয়ারী যুবদল নেতা সুরমান খান কে আহবায়ক করে ৩১ সদস্য বিশিষ্ট উপজেলা যুবদলের আহবায়ক কমিটি গঠন করা হয়।
জানাগেছে, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি থেকে সরকার পতনের আন্দোলন, নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস সন্ধান আন্দোলনে বিশ্বনাথের মাঠের বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়নে উপজেলা বিএনপির সহযোগী সংগঠন হিসেবে সবসময়ই সরব ছিল উপজেলা যুবদল। সংগঠনের পাশাপাশি এককভাবের সবখানে ভূমিকা রেখেছেন নেতাকর্মীরা। নতুন কমিটি ঘিরে পদপত্যাশীরে দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়েছে। সংগঠনের দায়িত্বশীলদের কাছে তদবির করতে অনেকে ছুটছেন রাজধানী ঢাকা ও জেলায়। বাদ নেই স্থানীয় নেতাদের কাছে ধরনা দেওয়াও। সাবেক ছাত্রনেতাদের মধ্যে কেউ কেউ হাল ধরতে চান উপজেলা যুবদলের। সংগঠনটির একাধিক নেতার সঙ্গে আলাপকালে জানা গেছে এসব তথ্য।
পদপ্রত্যাশী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন যুবদল নেতা বলেন, যুবদল একটি বৃহৎ সংগঠন। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি আন্দোলন, নিখোজ বিএনপি নেতা ও সিলেটের কোটি মানুষের প্রিয় নেতা এম ইলিয়াস আলীর সন্ধান আন্দোলসহ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে যুবদলের কর্মীরা হাসিনার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে রাজপথে সরব ছিল। দলের নেতা-কর্মীরা হামলা-মামলার স্বীকার হয়েছে। যুবদলের আহবায়ক কমিটি কমিটি গঠিত হয়েছে প্রায় দুই বছর আগে। বিএনপি’র সামনে নানা রকম রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ। রাজনৈতিক সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উপজেলা যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন সময়ের দাবি।
তারা আরো বলেন, সংগঠনের সার্বিক কর্মসূচি ও তৎপরতা বৃদ্ধির জন্য পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের বিকল্প নেই। কমিটি গঠনে বিলম্ব হলে নেতাকর্মীরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়বেন আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এর প্রভাব পড়তে পারে। পূর্ণাঙ্গ কমিটিতে ত্যাগী, পরীক্ষিত ও স্বচ্ছ ইমেজধারী নেতাকর্মীরা জায়গা পেলে সংগঠন মজবুত হবে।
সভাপিত প্রার্থীদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন বর্তমান আহবায়ক শামছুল ইসলাম, যুগ্ম-আহবায়ক মুসলিম আলী, সাধারণ সম্পাদক পদের আলোচনায় রয়েছেন বর্তমান কমিটির যুগ্ম-আহবায়ক নাজিম উদ্দিন, সদস্য রুমেল আলী। তবে সময় যত ঘনিয়ে আসবে তত পদপ্রত্যাশীদের সংখ্যা আরোও বৃদ্ধি পাবে পেতে পাবে বলে দলীয় নেতারা মনে করছেন।
উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী রুমেল আলী বলেন, “বিগত ১৭ বছর রাজনীতির মাঠে সক্রিয় থেকেছি। মামলা, হামলা ও নির্যাতনের শিকার হয়েছি। দল যদি ত্যাগী ও দক্ষদের মূল্যায়ন করে, তাহলে সেটি দলের জন্য মঙ্গলজনক হবে।”
উপজেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রত্যাশী নাজিম উদ্দিন বলেন, আমি দলের দুঃসময়ের কর্মী। আমি দীর্ঘ ১৭ বছর দলের প্রতিটি কর্মসূচিতে রাজপথে সক্রিয় ছিলাম। পুলিশের হামলা-নির্যাতনের শিকার হয়েছি বারবার। এখন নতুন কমিটি হবে দলের জেলার নেতৃবৃন্দ যদি আমার অতীতের ত্যাগের মূল্যায়ন করেন-তাহলে উপজেলা যুবদলকে তৃণমূল থেকে সুসংগঠিত করব।
উপজেলা যুবদলের আহবায়ক শামছুল ইসলাম জানান, উপজেলা যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। কমিটি যে কোনো সময় ঘোষণা হতে পারে। শেখ হাসিনার সরকারের সময় বিভিন্নভাবে আমি হামলা-মামলার শিকার হয়েছি।
তিনি বলেন, “আমি সভাপতি পদের প্রার্থী। দল যদি আমাকে যোগ্য মনে করে দায়িত্ব দেয়, আমি অতীতের মতো সততা, দক্ষতা ও আন্তরিকতার সঙ্গে তা পালন করব।”
এবিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট জেলা যুবদলের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম মোমিন বলেন, জেলার প্রতিটি উপজেলা যুবদলের কমিটি গঠন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। প্রতিটি উপজেলায় গিয়ে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিত্বে যুবদলের পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে। তবে কাউন্সিলের মাধ্যমে কমিটি গঠন হবে বলে তিনি জানান।