মাদকাসক্ত যুবককের দায়িত্ব নিলেন ইউএনও
প্রকাশিত হয়েছে : ০৭ আগস্ট ২০১৫ ইং, ১১:৪৫ পূর্বাহ্ণ | সংবাদটি ১৩১৯ বার পঠিত

মাদকাসক্ত ওই যুবকের নাম মো. আজিজুল ইসলাম। সে মির্জাপুর উপজেলা সদরের পোস্টাকামুরী গ্রামের শওকত আলীর ছেলে।
পুলিশ সূত্র জানান, মাইক্রোবাস চালক আজিজুল গত দুই বছর আগে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। পরে আজিজুল তার পেশা থেকে সরে যায়। নেশার টাকা যোগাতে না পেরে বাড়িতে স্ত্রীর ওপর নির্যাতন চালাতো। তা এক পর্যায় ভয়াবহ রূপ ধারণ করে। বাবা-মাকে নির্যাতন এবং বাড়ি ঘর ভাংচুর করতো। তার অত্যাচারের মাত্রা দিন দিন বাড়তে থাকলে অসহায় বাবা-মা গত বুধবার সন্ধায় মির্জাপুর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাইন উদ্দিনের স্মরণাপন্ন হন।
বুধবার রাতে মাদকাসক্ত অবস্থায় আজিজুল বাড়িতে ফিরলে তার বাবা মির্জাপুর থানা পুলিশকে খবর দিয়ে ধরিয়ে দেন। বৃহস্পতিবার পুলিশ আজিজুলকে ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে সাজা দেয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে নিয়ে যান।
এ-সময় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম আহমেদ মাদকাসক্ত আজিজুলকে সাজা না দিয়ে তার জীবনবৃত্তান্ত শোনেন। সে জানায় অষ্টম শ্রেণি পাসের পর লেখাপড়া বাদ দিয়ে তিন বছর আগে সে মাইক্রোবাস চালান শিখে। প্রায় দুই বছর আগে নেশাগ্রস্থদের সঙ্গে পড়ে নেশায় আসক্ত হয়। প্রতিদিন তার ৪/৫ পুরিয়া হেরোইন লাগে। যার বাজার মূল্য ৬শ টাকা। হেরোউনের পাশাপাশি প্রায় ১শ টাকার সিগারেট লাগে। টাকার ব্যবস্থা করতে না পারলে সে তার পরিবারের উপর অত্যাচার করে বলেও জানান।
পরে নির্বাহী কর্মকর্তা তাকে ভালো পথে ফিরে আসার জন্য পরামর্শ দিলে সে তা গ্রহণ করে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ভ্রাম্যমান আদালতের বিচারক মো. মাসুম আহমেদ আজিজুলের থাকা-খাওয়ার বন্দোবস্তের মাধ্যমে নিজ বাসায় রেখে ভালো করার দায়িত্ব নেন।
মাদকাসক্ত আজিজুলের সঙ্গে কথা হলে সে বলে কোন ধরণের নেশা ছাড়া প্রায় দুই দিন পার করেছি। ইউএনও স্যারের ভাল উপদেশ গ্রহণ করে ভালো হওয়ার চেষ্টা করছি। স্যারের বাসায় আছি। স্যারের পরামর্শে আমি ভালো হতে পারবো।
আজিজুলের বাবা শওকত আলীর সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ইউএনও স্যার আমার নেশাগ্রস্থ ছেলেকে ভাল হওয়ার যে সুযোগ দিয়েছেন তার জন্য আমি চিরকৃতজ্ঞ।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মাসুম আহমেদের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, নেশাগ্রস্থদের সাজা দিয়ে আদালতে পাঠলেও তারা ভালো হচ্ছে না। জামিনে বের হয়ে আবার নেশায় আসক্ত হয়ে পড়ে। নেশায় আসক্তদের ভালো করার জন্য বিকল্প হিসেবে প্রথম আজিজুলকে ভালো পথে ফিরিয়ে আনতে তার থাকা-খাওয়ার দায়িত্ব নিয়েছি। সে এখন আমার পর্যবেক্ষণে রয়েছে। যেহেতু সে ডাইভিং জানে সুস্থ হলে তার কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।