নিউজিল্যান্ডকে উড়িয়ে অস্ট্রেলিয়ার পঞ্চম শিরোপা
প্রকাশিত হয়েছে : ২৯ মার্চ ২০১৫ ইং, ৯:১৩ অপরাহ্ণ | সংবাদটি ৬৩৫ বার পঠিত
ক্রীড়া ডেস্ক :: আট আটটি ম্যাচ টানা জিতে বিশ্বকাপের একাদশ আসরের ফাইনালে পা রেখেছিল নিউজিল্যান্ড। যা আসরে আর কোনো দলই করতে পারেনি। কিন্তু ফাইনালে যেন খুঁজেই পাওয়া গেল না সেই নিউজিল্যান্ডকে। বলা চলে, ফাইনালের চাপই সামলাতে পারলেন না ম্যাককালাম-উইলিয়ামসনরা। নিউজিল্যান্ডকে একরকম উড়িয়ে দিয়ে নিজেদের পঞ্চম শিরোপা জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। ফলে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ফাইনালে উঠে খালি হাতেই ফিরতে হচ্ছে নিউজিল্যান্ডকে।
শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে নিউজিল্যান্ডকে ১৮৩ রানের গুটিয়ে দেওয়ার পর ৭ উইকেটের বিশাল জয় তুলে নিয়েছে অস্ট্রেলিয়া।
রোববার মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) টস জিতে আগে ব্যাট করে ৪৫ ওভারে মাত্র ১৮৩ রানে অলআউট হয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। জবাবে ৭ উইকেট ও ১০১ বল হাতে রেখে জয় তুলে নেয় অস্ট্রেলিয়া।
১৮৪ রানের লক্ষ্য দিয়ে ইনিংসের দ্বিতীয় ও নিজের প্রথম ওভারেই অস্ট্রেলিয়া শিবিরে আঘাত হানেন ট্রেন্ট বোল্ট। ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চকে নিজের ফিরতি ক্যাচে পরিণত করেন এই কিউই পেসার। ৫ বল মোকাবিলা করে ডাক মারেন ফিঞ্চ।
দলীয় ২ রানেই ফিঞ্চের বিদায়ের পর দ্বিতীয় উইকেটে প্রতিরোধ গড়েন ডেভিড ওয়ার্নার ও স্টিভেন স্মিথ। দুজন মিলে দলের স্কোর ফিফটি পার করেন। তবে দলীয় ৬৩ রানে ওয়ার্নারকে ফিরিয়ে ৬১ রানের জুটি ভাঙেন ম্যাট হেনরি। ৪৬ বলে ৭ চারে ৪৫ রান করেন ওয়ার্নার। এরপর মাইকেল ক্লার্ক ও স্টিভেন স্মিথের দারুণ ব্যাটিংয়ে সহজেই জয় পায় অস্ট্রেলিয়া।
এর আগে টস জিতে আগে ব্যাট করে ৪৫ ওভারে মাত্র ১৮৩ রানে অলআউট হয়ে যায় নিউজিল্যান্ড। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৮৩ রান করেন গ্র্যান্ট এলিয়ট। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪০ রান আসে রস টেলরের ব্যাট থেকে। এ ছাড়া দলের আর কোনো ব্যাটসম্যানই অস্ট্রেলিয়ার বোলারদের সামনে দাঁড়াতে পারেননি।
অসিদের হয়ে সর্বোচ্চ ৩টি করে উইকেট নেন মিচেল জনসন ও জেমস ফকনার। ২টি উইকেট জমা পড়ে মিচেল স্টার্কের ঝুলিতে।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে উইকেটের প্রকৃতি বুঝে ওঠার আগেই বিদায় নেন ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। অস্ট্রেলিয়ার পেসার মিচেল স্টার্কের করা ইনিংসের প্রথম ওভারের পঞ্চম বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরের পথ ধরেন কিউই অধিনায়ক। এদিন রানের খাতাই খুলতে পারেননি তিনি।
শুরুতেই ম্যাককালামের বিদায়ের পর দ্বিতীয় উইকেটে প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা করেন মার্টিন গাপটিল ও কেন উইলিয়ামসন। ইনিংসের ১২তম ওভারে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলকে বোলিংয়ে নিয়ে অাসেন অসি অধিনায়ক মাইকেল ক্লার্ক। আর নিজের প্রথম ওভারেই দলকে সাফল্য এনে দেন ম্যাক্সওয়েল। গাপটিলকে ফিরিয়ে ৩২ রানের জুটি ভাঙেন তিনি। ৩৪ বলে গাপটিলের সংগ্রহ ১৫ রান। পরের ওভারে উইলিয়ামসনকে (১২) ফিরতি ক্যাচে পরিণত করেন মিচেল জনসন।
৩৯ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বিপদে পড়া দলের হাল ধরেন রস টেলর ও গ্র্যান্ট এলিয়ট। চতুর্থ উইকেটে শতরানের জুুটি গড়ে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন দুজন। তবে ইনিংসের ৩৬তম ওভারের প্রথম বলে টেলরকে ফিরিয়ে ১১১ রানের বড় জুটি ভাঙেন জেমস ফকনার। ব্র্যাড হ্যাডিনের গ্লাভসবন্দি হন ৪০ রান করা টেলর। আর টেলরকে ফেরানোর পরের বলেই নতুন ব্যাটসম্যান কোরি অ্যান্ডারসনকে সাজঘরে পাঠান ফকনার।
সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে ক্রিজে এসে ৪ বল মোকাবিলা করে ডাক মারেন লুক রনকি। স্টার্কের বলে তার বিদায়ে নিউজিল্যান্ডের স্কোর দাঁড়ায় ১৫১/৬। এরপর দলীয় ১৬৭ রানে ড্যানিয়েল ভেটোরি ফেরেন ব্যক্তিগত ৯ রান করে। স্কোরবোর্ডে আর ৪ রান যোগ হতে শেষ ভরসা গ্র্যান্ট এলিয়টও বিদায় নেন। ৮২ বলে ৭ চার ও এক ছক্কায় ৮৩ রান করেন এলিয়ট। এরপর টিম সাউদি ও ম্যাট হেনরি দ্রুত বিদায় নিলে নিউজিল্যান্ডের ইনিংস গুটিয়ে যায় ১৮৩ রানেই।
এই ম্যাচে অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড দুই দলই তাদের সেমিফাইনালের একাদশ অপরিবর্তিত রেখেছে।
অস্ট্রেলিয়া দল : মাইকেল ক্লার্ক (অধিনায়ক), অ্যারন ফিঞ্চ, ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভেন স্মিথ, শেন ওয়াটসন, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, ব্র্যাড হ্যাডিন, জেমস ফকনার, মিচেল জনসন, মিচেল স্টার্ক ও জস হ্যাজেলউড।
নিউজিল্যান্ড দল : ব্রেন্ডন ম্যাককলাম (অধিনায়ক), মার্টিন গাপটিল, কেন উইলিয়ামসন, রস টেলর, কোরি অ্যান্ডারসন, গ্র্যান্ট এলিয়ট, লুক রনকি, ড্যানিয়েল ভেটোরি, টিম সাউদি, ট্রেন্ট বোল্ট ও ম্যাট হেনরি।