বালাগঞ্জে মোবাইল অপারেটর গুলোর দুর্বল নেটওয়ার্ক : গ্রাহকদের ভোগান্তি
প্রকাশিত হয়েছে : ০৬ মে ২০১৫ ইং, ৮:৩১ অপরাহ্ণ | সংবাদটি ২০১৪ বার পঠিত
শামীম আহমদ, বালাগঞ্জ::বালাগঞ্জে মোবাইল অপারেটর গুলোর দুর্বল নেটওয়ার্কের কারনে গ্রাহক ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা ডিজিটাল ভোগান্তিতে রয়েছেন। বিশেষ করে এই এলাকার ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ডিজিটাল বাংলাদেশে প্রযুক্তি এখন মানুষের নিত্য সঙ্গী কিন্তু অত্রালাকায় মোবাইল, ল্যাপটপ কিংবা কম্পিউটারে ইন্টারনেট ব্যবহার করা দুস্বাধ্য ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে। সর্বাধিক গ্রাহক দাবীদার জনপ্রিয় মোবাইল কোম্পানী গ্রামীন ফোনসহ দেশের ছয়টি মোবাইল অপারেটরের মধ্যে কোনটিরই শক্তিশালী নেটওর্য়াক বালাগঞ্জ এলাকায় নেই বললেই চলে। মোবাইল অপারেটর গুলো গ্রাহকদের সুবিধার্থে ত্রিজি সেবা চালু করলেও স্বাভাবিক নেটওয়ার্কের সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছেন এ অঞ্চলের মোবাইল গ্রাহকরা।
মোবাইল কোম্পানী গুলো উন্নত সেবা দেয়ার মানসে নানা প্রতিশ্র“তি ও প্রচার মাধ্যমে চটকদার বিঞ্জাপন প্রচার করে গ্রাহকদের সাথে রীতিমত প্রতারনা করছে বলে গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন। মোবাইল ফোন কেম্পানী গুলোকে রক্ত চুষা জোক উল্লেখ করে গ্রাহকরা বলেন, অন্যান্য দেশের লোকাল কল চার্জের তুলনায় আমাদের দেশের ফোন কেম্পানী গুলো প্রায় দ্বিগুন কল চার্জ আদায় করছে এরপরও আমাদের এত ভোগান্তি তা মেনে নেয়া যায়না। পীরপুর, রিফাতপুর, রাউৎ খাই, বড় ইসবপুর, শারশপুর সহ উপজেলার অর্ধেকেরও বেশী এলাকা এখও শক্তিশালী নেটওয়ার্কের আওতার বাহিরে রয়েছে।
এ ব্যাপারে নিকটস্থ কাস্টমার কেয়ার কিংবা মোবাইল কেম্পানীর (১২১) গ্রাহক সেবা সার্ভিসের নাম্বারে বার-বার ফোন করে অভিযোগ দেয়ার পরও কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না একানকার গ্রাহকরা। সাচ্ছন্ধে কথা বলতে না পারায় গ্রাহকদের আর্থিক লুকসানও গুনতে হচ্ছে। বিশেষ করে এই এলাকায় তুলনামুলক ভাবে গ্রামীন ফোনের গ্রাহক সংখ্যাই বেশী কিন্তু দুর্বল নেটের কারনে গ্রাহকরা অতি মত্রায় ভোগান্তি পোহাচ্ছন। আবার বাধ্য হয়ে অনেকেই মোবাইল সাথে নিয়ে হাওরে গিয়ে বসে ফোনে প্রয়োজনীয় কথা বলতে দেখা গেছে। এ ব্যাপারে উপজেলার কয়েকটি ব্যবসা প্রতিষ্টান ও সামাজিক সংগঠনের পক্ষ থেকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রীসহ প্রধানন্ত্রীর নিকট লিখিত অভিযোগ দেয়ার প্রস্তুতি চলছে বলে জানা গেছে।
সম্প্রতি উপজেলা সদর এলাকায় গ্রামীন ও রবি মোবাইল কোম্পানী ত্রিজি সেবা করেছে। তাছাড়া উপজেলা সদরে অন্যান্য মোবাইল অপারেটর গুলোর নেটওয়ার্ক নাম মাত্র থাকলেও উপজেলা সদর থেকে থেকে প্রায় দেড় থেকে দুই কিলোমিটার দুরে অস্থানকারী মোবাইল গ্রাহকরা তাদের মোবাইল ফোনে একটানা কথা বলতে পারছেন না বলে গ্রাহকরা অভিযোগ করেছেন। আউট গোয়িং কিংবা ইনকামিং কলের সময় বার-বার সংযোগ বিচ্ছন্ন হয়ে লাইন কেটে যাচ্ছ। দেশের বাহির থেকে প্রবাসীরা ফোন করলে দুর্বল নেটওর্য়াকের কারনে স্পষ্ট ভাবে কথা বুঝা যায়না। এতে করে বিদেশে অস্থানরত প্রবাসীরা খুই বিব্রতবোধ করছেন। মোবাইল ফোনে কথার বলার সময় ঘর থেকে বের হয়ে নেটওয়ার্কের কভারেজ নিশ্চিত হয়ে ফোনে কথা বলতে হচ্ছে। রাতের বেলায় ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ থাকাবস্থায় একেবারেই কথা বলা সম্ভব হচ্ছেনা। নেটওয়ার্ক সুবিধা পাওয়ার জন্য একেকজন গ্রাহক বিভিন্ন ফোন কেম্পানীর একাধিক সীম মোবাইলে ব্যবহার করেও কাঙ্কিত নেটওয়ার্ক সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
গ্রামীন ফোনের গ্রাহক সাংবাদিক মাছুম চৌধুরী বলেন, মোবাইলে ভাল করে কথা বলতে পারিনা আর ইন্টারনেট ব্যবহার করার কথাতো কল্পনাই করা যায়না, দুর্বল নেটেওয়ার্কের কারনে নিউজ সক্রান্ত ই-মেইল আদান-প্রদান করা এখন কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়েছে। বালাগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের ছাত্র রিফাত পুর গ্রামের বাসিন্ধা গ্রাফিক্স ডিজইনার ফকরুল ইসলাম সবুজ জানান, নেটওয়ার্কের সমস্যার কারনে ল্যাপটপে কোন কাজ করতে পারছি না, এমনকী স্কাইপির মাধ্যমে আমার প্রবাসী আত্মীয় স্বজনের সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছেনা। গৃহবধূ শাহানারা বেগম বলেন, আমার স্বামী ডুবাই থাকেন কাজের ফাকে তিনি রাতের বেলায় আমাদের কাছে ফোন করেন, কিন্তু রাতে ঘর থেকে বের হয়ে মোবাইলে কথা বলা সম্ভব হয়নী । দুর্বূল নেটওয়ার্কের কারনে বার-বার লাইন কেটে যায় এ জন্য আমার স্বামী আমাদের কাছে ফোন করতে অনিহা দেখান।