বিশ্বনাথে ছাত্রলীগ নেতা হত্যা মামলার আসামীদের সঙ্গে তদন্ত কর্মকর্তার দহরম-মহরমের অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ৩০ জুলাই ২০২২ ইং, ৫:৪২ অপরাহ্ণ | সংবাদটি ৩১৪ বার পঠিত
নিজস্ব সংবাদদাতা:: সিলেটের বিশ্বনাথের চাঞ্চল্যকর ছাত্রলীগ নেতা আবদুল বাছিত হত্যা মামলার আসামিদেও সঙ্গে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বিশ্বনাথ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রুমেন আহমদের দহরম-মহরমের অভিযোগ উঠেছে। আজ শনিবার (৩০ জুলাই) দুপুরে নিহতের পরিবার এবং উপজেলা কৃষক লীগ, শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও ছাত্রলীগ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন অভিযোগ তুলে মামলা থেকে ওই তদন্ত কর্মকর্তাকে পরিবর্তন এবং অন্য কোনো সংস্থা দ্বারা তদন্ত কাজ করার দাবি জানানো হয়। সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য রাখেন উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ বোরহান আহমদ রুবেল।
বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘বিশ্বনাথের চাঞ্চল্যকর ছাত্রলীগ নেতা আবদুল বাছিত খুনের ঘটনায় এতদিন পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত মামলার সকল আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। বিএনপি-জামাতের দোষর, চিহ্নিত সন্ত্রাসী মামলার আসামিগণ ধনে-জনে বলিয়ান। প্রধান আসামি সুমন মিয়ার ভাই হিরন মিয়া ও লিটন সৌদি আরবে, শিপন যুক্তরাজ্যে, লিপন ফ্রান্সে এবং অপর আসামি ফারুকের ভাই মারুফ ও আসামি সামাদ-কাইয়ুমের ভাই আকিব কাতারে থাকায় তারা টাকার জোরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বিশ্বনাথ থানার উপপরিদর্শক (এসআই) রুমেন আহমদকে প্রভাবিত কওে ফেলেছে। পলাতক আসামিদের সঙ্গে এসআই রুমেনের রীতিমত দহরম-মহরম। বিশ্বনাথ বাজার ও টেংরা বাজারে এসআই রুমেল আহমদ আসামিদের সঙ্গে একত্রে চলাফেরা করেন। তিনি এখনও পর্যন্ত মামলার বাদী ও স্বাক্ষীগণকে জিজ্ঞাসাবাদ পর্যন্ত করেননি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের মামলা হতে বাদ দিয়ে মনগড়া প্রতিবেদন দাখিল করার প্রস্তুতি নিয়েছেন। মামলায় মিথ্যা আসামি দেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে বাদিকে তিনি হুমকিও দিয়েছেন। শুধু তাই নয়, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রুমেনের সঙ্গে দহরম-মহরম থাকায় মামলার আসামি সামাদ মিয়া, কাইয়ুম মিয়া, আহাদ মিয়া প্রতিরাতেই নিজঘরে রাত্রিযাপন করে আসছে। পাশাপাশি, মামলার চার্জশীট থেকে তাদের নাম বাদ পড়বে-এমন দম্ভ দেখিয়ে ওই আসামিরা প্রকাশ্যেই বাদি নিহত বাছিতের বড়ভাই শাহীন মিয়াকে হুমকি দিয়ে আসছে।
লিখিত বক্তব্যে সুস্পষ্ট দাবি জানানো হয়, চাঞ্চল্যকর ছাত্রলীগ নেতা বাছিত খুনের ঘটনা সঠিক তদন্তের স্বার্থে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা রুমেন আহমদকে পরিবর্তন করা, অন্য কোনো সংস্থার দ্বারা তদন্ত কাজ করা, মামলার বাকি ৩ আসামিকে দ্রæত গ্রেপ্তার করে সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে সব আসামির নাম চার্জশীটে অন্তর্ভূক্ত করা। এর ব্যত্যয় হলে দাবি আদায়ে কঠোর আন্দোলনে নামার হুশিয়ারিও দেওয়া হয় সংবাদ সম্মেলনে। এ সময় কান্নাজড়িত কণ্ঠে ছেলের খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান নিহত বাছিতের মা আনোয়ারা খাতুন।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মামলার বাদি নিহত বাছিতের বড়ভাই শাহীন মিয়া, বড়বোন রোজিনা বেগম, সুজিনা বেগম, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি বদরুল আলম, উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান হাবিব প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১৫ এপ্রিল শুক্রবার দিবাগত রাতে রাস্তা নিয়ে বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষের ছুরিকাঘাতে নিহত হন সিলেটের বিশ্বনাথের অলংকারী ইউনিয়নের টেংরা (টিলাপাড়া) গ্রামের মৃত আপ্তার মিয়ার ছেলে এবং উপজেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী আবদুল বাছিত। এ ঘটনায় একই গ্রামের টেংরা (টিলাপাড়া) গ্রামের মৃত নামর মিয়ার ছেলে সুমন মিয়া, তোরন মিয়ার ছেলে ফারুক মিয়া, মৃত তছলিম মিয়ার ছেলে সামাদ মিয়া, কাইয়ুম মিয়া, টেংরার (বড় মসজিদের উত্তরের) মৃত আবদুল ছত্তারের ছেলে আহাদ মিয়া ও অজ্ঞাতনামা ১ জনকে (পিকআপ চালক) আসামি করে ১৭ এপ্রিল রাতে বিশ্বনাথ থানায় মামলা করেন নিহতের বড়ভাই শাহীন মিয়া।