বিশ্বনাথে আত্বগোপনে আ.লীগ নেতাকর্মীরা, মাঠে সরব বিএনপি-জামায়াত
প্রকাশিত হয়েছে : ২২ আগস্ট ২০২৪ ইং, ৯:৪০ পূর্বাহ্ণ | সংবাদটি ৯৫ বার পঠিত
মোহাম্মদ আলী শিপন:: শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলায় চলছে রাজনৈতিক মাঠ দখলের প্রতিযোগিতা। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জনগণের কাছাকাছি গিয়ে দলীয় নেতা-কর্মীদের উজ্জীবিত করছেন বিএনপি ও জামায়াত। বর্তমানে বিএনপি-জামায়াতের দখলে বিশ্বনাথ উপজেলা। তবে জামায়াতের কর্মসূচি কম থাকলেও বিএনপি ও সহযোগি সংগঠনের বিভিন্ন কর্মসূচি প্রতিনিয়ত পালন করছে। গত ৫ আগস্ট থেকেই সারা দেশে আওয়ামী লীগের বেশিরভাগ নেতা-কর্মীর বাড়িঘরসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তিগত-রাজনৈতিক কার্যালয়ে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করা হয়। সরকার পতন ও বিরোধীদের হামলা থেকে বাঁচতে গত ৫ আগস্ট থেকেই বিশ্বনাথে আ.লীগ ও সহযোগি সংগঠনের বড় নেতারা আত্মগোপনে চলে যান। গা ঢাকা দেন কর্মীরাও। আত্মগোপনে থাকায় দলীয় কার্যক্রম হচ্ছে না। এমনকি গত ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী ঘিরেও উপজেলার কোথাও কোনো কর্মসূচি ছিল না টানা ১৫ বছর রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা দলটির। ক্ষমতার পালা বদলে রাজনীতির মাঠে চাঙ্গা হয়েছে বিএনপি-জামায়াতের।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে বিশ্বনাথ উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা আত্মগোপনে চলে যান। গা ঢাকা দেন আওয়ামী সমর্থিত পৌরসভার কাউন্সিলর ও ইউপি চেয়ারম্যান এবং সদস্যরাও (মেম্বার)।
গত ১ আগস্ট রাজনৈতিক দল জামায়াতে ইসলামীকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে তৎকালীন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার। জামায়াত নিষিদ্ধ করার চার দিন পর ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। এরপরই সারা দেশে কোনো রকমের দ্বিধাদ্বন্ধ ছাড়াই প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কার্যক্রম চালাচ্ছে জামায়াতে ইসলামী।
এবিষয়ে পৌর আওয়ামী লীগের এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, অনেক নেতা-কর্মীরা আত্মগোপনে থাকার কারণে এই মুহূর্তে কোন কর্মসূচি করা যাচ্ছে না।
বিশ্বনাথ পৌর বিএনপির সভাপতি হাজী আবদুল হাই বলেন, সরকার পতনের পর বিএনপি নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হয়েছেন। দীর্ঘদিন অবৈধ শেখ হাসিনা সরকার বিএনপির অসংখ্য নেতাকর্মীকে বিভিন্নভাবে হয়রানি করেছিল। আমাদের প্রাণপ্রিয় নেতা সাবেক সংসদ সদস্য এম ইলিয়াস আলীকে জালিম সরকার গুম করেছিল। এখনও আমাদের নেতার কোনো হদিস না পাওয়ায় দলীয় নেতাকর্মীরা হতাশ রয়েছেন। বিশ্বনাথে বিএনপির ঘাটি হিসেবে পরিচিত রয়েছে।
উপজেলায়ও দীর্ঘদিন পর রাজপথে প্রকাশ্যে এসে কার্যক্রম বাস্তবায়ন করতে দেখা যায় জামায়াতে ইসলামী দলটির স্থানীয় পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের। প্রতিশোধ পরায়ণ না হয়ে সৌহার্দ্যপূর্ণ রাজনীতি করতে চায় তারা। দলটির উপজেলা কমিটির সভাপতি নিজাম উদ্দিন সিদ্দিকী বলেন, আমরা সব সময় রাজনীতিতে সহাবস্থান নীতি অবলম্বন করতে চাই। অসা¤প্রদায়িক রাজনীতিতে বিশ্বাসী। এখানে সংখ্যালঘু বলতে কোন মানুষ নেই, সবাই আমরা এক দেশের মানুষ। গত ৫ আগস্টের পর এখানে হিন্দু ধর্মের মানুষের জানমাল এবং তাদের মন্দিরের নিরাপত্তা দিতে আমাদের কর্মীরা রাত জেগেছিল। কোন হিংসা-বিভেদ এমনকি প্রতিশোধ পরায়ণের রাজনীতি কখনোই জামায়াত ইসলামের আদর্শে নেই।