গণহত্যাকারী হাসিনাকে দেশে এনে ফাঁসি দিতে হবে—ইলিয়াসপত্নী তাহসিনা রুশদীর
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ইং, ৮:৪৪ অপরাহ্ণ | সংবাদটি ২১১ বার পঠিত
মোহাম্মদ আলী শিপন:: বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্ঠা ও নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াসপতœী তাহসিনা রুশদীর বলেছেন, ক্ষমতা স্থায়ী করতে ভারতের কাছে দেশ বিক্রি করেছিল ফ্যাসিস্ট হাসিনা। ভারতের সাথে অনেক অপ্রকাশিত চুক্তি ছিল তার। তবুও শেষ রক্ষা হয়নি। পালিয়ে যেতে হয়েছে সেই ভারতেই। ভারতে অবস্থান করে এখন নানা ষড়যন্ত্রে লিপ্ত রয়েছে। খুনি হাসিনা বলেছিল সে পালায় না, তবে এখন কে পালালো? বড় বড় নেতারাও পালিয়েছে। কিন্তু বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া নেতাকর্মীদের রেখে পালিয়ে যাননি, দেশেই জেল খেটেছেন। আর নেতাকর্মীরাও বিগত ১৫ বছর জেল জুলুম সহ্য করে দেশে ছিলেন। খুন-গুমের নায়ক ও গণহত্যাকারী হাসিনাকে দেশে এনে ফাঁসি দিতে হবে।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৫টায় সিলেটের বিশ্বনাথ পৌর শহরে উপজেলা-পৌর যুবদল, সেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল আয়োজিত গণ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তাহসিনা রুশদীর আরও বলেন, ছাত্র আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা একটি গণতান্ত্রিক দেশ পেয়েছি। এই ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষাপট তৈরি হয়েছিল ১৫ বছর আগে। ছাত্রদের আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকায় ছিল বিএনপি। আর বিএনপির দীর্ঘদিনের ত্যাগ স্বীকার ও ছাত্রদের সাহসী ভূমিকাসহ সমস্ত শক্তি একত্রিত হওয়ায় ফসল হিসেবে নতুন বাংলাদেশ আমরা পেয়েছি। আজ আমরা ১৭ বছর পর বাঁধাহীন ও চিন্তাহীনভাবে সমাবেশ করতে পারছি। গত ১৭টি বছর ফ্যাসিস্ট সরকার ক্ষমতায় থেকে মানুষকে গুম, খুন ও মামলা, জুলুম করেছে। নিরীহ মানুষকে গুলি করে নির্বিচারে হত্যা করেছে। বিএনপির নেতাকর্মীরা ১৭ বছর সপ্তাহের ৫দিন আদালতের দরজায় কাটাতে হয়েছে। দেশ নায়ক তারেক রহমানকে নির্বাসনে থাকতে হয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমানে শেখ হাসিনার দূসররা বিভিন্ন স্থানে দখলবাজী, চাঁদাবাজী করে বিএনপির উপর দোষ চাপাচ্ছে। বিএনপির কারো বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ আসে তাদের বিরুদ্ধে বিএনপি জিরো টলারেন্স। এটা তারেক জিয়ার নির্দেশ। আর কোন নিরীহ মানুষ যাতে মামলা বা হয়রানীর শিকার না হয় সেদিকে সজাগ থাকতে হবে। বর্তমান অর্ন্তবর্তি সরকারকে এখন সহযোগিতা করতে হবে। আমরা সবাই মিলে একটি সম্প্রতির বাংলাদেশ গড়তে চাই। প্রধান উপদেষ্ঠাকে গুম বিরোধী আর্ন্তজাতিক প্রস্তাবে স্বাক্ষর করায় ধন্যবাদ জানিয়ে লুনা বলেন, হাসিনা সরকার যাদের গুম করেছে তদন্ত করে এম ইলিয়াস আলীসহ তাদেরকে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেয়ার অনুরোধ জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন,“গুমের সাথে জড়িত থাকা জিয়াউলকে গ্রেপ্তারের এক মাস হয়ে গেলেও সরকার তার কাজ থেকে তেমন কোন তথ্যই উৎঘাটন করতে পারেননি। তাই আমাদের নেতা তারেক রহমান প্রবাসে থেকেও আমাদের দেশ ও দলকে আগলে রেখে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছেন। বিএনপির নেতাকর্মীদেরকে সেই নিদের্শনা অনুযায়ীই চলতে হবে। আর দেশে থাকা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকা নিরীহ ব্যক্তিদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, বিপদের সময় যারা তাদেরকে ফেলে পালিয়ে গেছে। এখন তারা পালিয়ে যাওয়া নেতাদের অধীনে রাজনীতি করবেন কিনা। আর বিএনপি কখনও আওয়ামী লীগের মতো নিরীহদেরকে মামলায় অভিযুক্ত করে হয়রাণী করবে না, তবে প্রকৃত অপরাধের সাথে জড়িতদেরকে এক ইঞ্চিও ছাড় দেওয়া হবে না। চাঁদাবাজি-দখলবাজির সাথে বিএনপির কেউ জড়িত থাকলে তার বিরুদ্ধে দলীয় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনের পাশাপাশি তাকে আইনের কাছে হস্তান্তর করা হবে। সুতরাং সবাই সাবধান, আর আওয়ামী লীগ এসব কর্মকান্ড করে যাতে আমাদেরকে ফাঁসাতে পারে না সেদিকেও স্বজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।”
উপজেলা যুবদলের আহবায়ক সামছুল ইসলামের সভাপতিত্বে গণসমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি গৌছ আলী, পৌর বিএনপির সভাপতি হাজী আবদুল হাই, উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক লিলু মিয়া, পৌর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শামসুল ইসলাম, উপজেলা বিএনপির সহ-সভাপতি ডা. মাহবুব আলম জহির, যুক্তরাজ্য বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক গোলজার খান।
উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহবায়ক নাজিম উদ্দিন, পৌর যুবদলের আহবায়ক শাহ আমির উদ্দিন, পৌর সেচ্ছাসেবকদলের সদস্য সচিব দুলাল আহমদ, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ফাহিম আহমদ ও পৌর ছাত্রদলের সদস্য সচিব জাকির হোসেনের যৌথ পরিচালনায় সভায় বক্তব্য রাখেন উপজেলা যুবদলের যুগ্ম-আহবায়ক মুসলিম আলী, সদস্য রুমেল আলী, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক শাহজাহান আলী, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক নূরুজ্জামনা, তাজ উদ্দিন আহমদ কিনু, পৌর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহবায়ক এম এ গণি, আরশ আলী, উপজলা ছাত্রদলের আহবায়ক হুসাইন আহমেদ প্রবেল, পৌর ছাত্রদলের আহবায়ক ফখরুল ইসলাম রেজা, যুগ্ম আহবায়ক বকুল আহমদ, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য আব্দুল কাইয়ুম, নূর উদ্দন সামির, শাহ টিপু, বিশ^নাথ সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহবায়ক মেহেদী হাসান মামুন, সদস্য সচিব রাসেল আলী প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন পৌর যুবদলের সদস্য ওয়াসিম উদ্দিন। এসময় অনুষ্ঠানে বিএনপি ও অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এরআগে বিকেল ৩টায় থেকে গণসমাবেশে পৌর ও বিভিন্ন ইউনিয়ন যুবদল, সেচ্ছাসেবকদল, ছাত্রদলের ব্যানারে মিছিল এসে সমাবেশ মাঠ কানায় কানায় পূর্ন হয়ে উঠে।