বিশ্বনাথে ভারতীয় চিনি জব্দ, পুলিশ জড়িতের অভিযোগ
প্রকাশিত হয়েছে : ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ইং, ৫:৫৮ অপরাহ্ণ | সংবাদটি ১১৬ বার পঠিত
নিজস্ব সংবাদদাতা:: সিলেটের বিশ্বনাথে ২০৪ বস্তা ভারতীয় চিনি জব্দ করেছে থানা পুলিশ। আটক করা হয়েছে একটি কার্গো কার্ভাড ভ্যান ও পিকআপ ভ্যানসহ এক চালককে। শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টায় উপজেলার শিমুলতলার মোরাবাজার এলাকা থেকে এ গুলো জব্দ করা হয়। আটক পিকআপ চালক রুমান আহমদ (২৪) উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের দশদল গ্রামের জোনাব আলীর ছেলে। এসময় অন্য চোরাকারবারিরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হওয়ায় তাদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। তবে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র বলছে, এই চিনি কান্ডের সাথে জড়িত খোদ থানার কতিপয় কিছু অসৎ পুলিশ সদস্যরাই।
থানা পুলিশ সূত্র জানায়, জব্দ হওয়া এ ভারতীয় এ চিনির মালিক দাবীদার সিলেটের জৈন্তা উপজেলার জনৈক ব্যবসায়ী সালাহউদ্দিন। তিনি তামাবিল বর্ডারের বিজিবি থেকে নিলামে নিয়ে, সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসের কার্গো ভ্যানে (ঢাকা মেট্টো-উ-১৪-০৭৬২) এসব চিনি রংপুরের উদ্দেশ্যে পাঠাচ্ছিলেন। পথিমথ্যে নবীগঞ্জের আউশকান্দি এলাকায় ছিনতাইকারীরা চিনিসহ গাড়ীটি ছিনতাই করে বিশ্বনাথ থানা এলাকায় নিয়ে আসে। পরে রাতে কার্গো ভ্যান থেকে চিনি অনত্র সরিয়ে নিতে পিকআপ ভ্যানে (সিলেট মেট্টো-ন-১১-০৫৫১) আনলোড করার সময় পুুলিশ হানা দেয়। এসময় দুই গাড়ী মিলিয়ে ১৬৮ বস্তা চিনি জব্দ করা হয়। আটক করা হয় ভ্যান চালক রুমানকে। পরে অভিযান চালিয়ে জানাইয়া গ্রামের একটি বাড়ি থেকে পরিত্যাক্ত অবস্থায় আরও ৩৬ বস্তা চিনি জব্দ করে পুলিশ। যার বাজার মূল্য ১২ লাখ ৬৪ হাজার ৮শ টাকা প্রায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, বিশ্বনাথ রুটের চিনিচক্রের হোতা বিশ্বনাথ থানার সাবেক পুলিশ কন্সটেবল শামসুুল ওরফে শামসু (বর্তমান ওসমানীনগর থানায় কর্মরত) ও এসআই আবু সালেহ। এ কাজে প্রসিদ্ধ কন্সটেবল শামসুলই ম্যানেজ করে সব। চিনি কান্ডে জড়িয়ে অঢেল সম্পদ কামিয়েছেন তিনি। গেল রাতে তারাই মূলত এ ঘটনা ঘটিয়েছেন। বিষয়টি এক সাংবাদিকের মাধ্যমে ধরিয়ে দেয়ার, তারা জানাইয়া গ্রামের আসক আলী নামের এক ব্যক্তিকে ফাঁসিয়েছেন। তার বাড়ি থেকেও দেখিয়েছেন চিনি উদ্ধার।
আসক আলী জানান,‘চিনি ছিনতাই করে সরিয়ে নেয়ার খবর জানতে পেরে, প্রথমে আমি একজন সাংবাদিককে জানাই। বিষয়টি জানতে পেরে থানার দারোগা আবু সালেহ আমার সাথে রফা করতে বসতে চান। এ নিয়ে বসতে অপারগতা প্রকাশ করি আমি। এক পর্যায়ে পুলিশ এসে চিনি জব্দ করে। আমি বিষয়টি ধরিয়ে দেয়ার কারণে, আবু সালেহ আমার বাড়ীতে লোক দিয়ে চোরাই চিনি রেখে উদ্ধার দেখান। তিনি আমাকে ফাঁসানোর অপ্রচেষ্টায় আছেন। আমি সকলের সহযোগিতা চাই।
অভিযুক্ত এসআই আবু সালেহ অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, আমি ও আমার টিমের মাধ্যমেই চোরাই চিনি উদ্ধার হয়েছে। তাহলে আমার সম্পৃক্ততা থাকে কি করে? জানাইয়া গ্রামে চিনি আনলোডের খবর পেয়ে আমরা গিয়ে উদ্ধার করে আনি। যিনি অভিযোগ তুলেছেন, তার বাড়ি থেকেও চিনি উদ্ধার হয়েছে। সেটার কি হবে?
এ বিষয়ে বিশ্বনাথ পুলিশ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুবেল মিয়া বলেন, ‘চিনিসহ দুুটি গাড়ী জব্দ ও একজনকে আটক করা হয়েছে। এর সাথে কারা কারা জড়িত তদন্তের মাধ্যমে বের করা হবে। তিনি বলেন, পুলিশের সম্পৃক্ততার অভিযোগটি আমি খতিয়ে দেখব।