অপপ্রচারকারীদের ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাল দিল বিশ্বনাথের তিন সাংবাদিক সংগঠন
প্রকাশিত হয়েছে : ১৮ এপ্রিল ২০২৫ ইং, ১:৫৭ পূর্বাহ্ণ | সংবাদটি ২২৬ বার পঠিত
নিজস্ব সংবাদদাতা:: সিলেটের বিশ্বনাথে সাংবাদিকদের নিয়ে বিভিন্ন সোস্যাল মিডিয়ায় মিথ্যা, বানোয়াট ও কাল্পনিক অভিযোগকারী ৪ অপপ্রচারকারীর বিরুদ্ধে এবার ২৪ ঘন্টার আল্টিমেটাম দিয়েছে বিশ্বনাথের তিন সাংবাদিক সংগঠন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১৭ এপ্রিল) বৃস্পতিবার রাতে বিশ্বনাথের ৩ সাংবাদিক সংগঠন বিশ্বনাথ প্রেসক্লাব, বিশ্বনাথ মডেল প্রেসক্লাব ও বিশ্বনাথ সাংবাদিক ইউনিয়ন যৌথ এক প্রেসব্রিফিং এ এই আল্টিমেটাম প্রদান করা হয়। বিশ্বনাথ প্রেসক্লাব কার্যালয়ে আয়োজিত এ যৌথ প্রেস ব্রিফিং তিন সংগঠনের পক্ষে লিখিত বক্তব্য রাখেন বিশ্বনাথ সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, “আমরা বিশ্বনাথ উপজেলায় কর্মরত বিশ্বনাথ প্রেসক্লাব, বিশ্বনাথ মডেল প্রেসক্লাব ও বিশ্বনাথ সাংবাদিক ইউনিয়নের সাংবাদিকবৃন্দ দীর্ঘদিন ধরে সুনামের সঙ্গে সাংবাদিকতা পেশার সকল নিয়ম নীতি মেনে কাজ করে আসছি। সম্প্রতি বিভিন্ন ব্যক্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সম্পূর্ণ কাল্পনিক, মিথ্যা, বানোয়াট তথ্যের ভিত্তিতে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করে আসছে। যা সাংবাদিকদের মনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। পাশাপাশি বিশ্বনাথবাসীসহ সচেতন মহলে ক্ষুব্দ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। আমরা সাংবাদিকদের মানহানির এ অপপ্রয়াস চালানোর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি ।
সম্প্রতি বিভিন্ন ব্যক্তি ফেসবুক আইডি, ফেসবুক পেইজ ও অনিবন্ধিত কয়েকটি অনলাইন পোর্টালে বিশ্বনাথে কর্মরত সাংবাদিকদের নিয়ে অপপ্রচার চালান। অপপ্রচারকারিরা উল্লেখ করেন, ‘বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুনন্দা রায় তড়িগড়ি করে ঈদুল ফিতরের ৩-৪দিন পূর্বে পৌর শহরের বাসিয়া নদীর বর্জ্য অপসারণের কাজ শেষ করে কিছু সাংবাদিক নিয়ে বসে তাদের মুখ বন্ধ করার ব্যবস্থা করেন। যাহাতে বর্জ্য অপসারণের দূর্নীতির সংবাদ প্রকাশিত না হয়’। অপপ্রচারকারিরা আরও অপপ্রচার চালান যে, একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সরকারের ৭ লক্ষ টাকা অতল গহরে। আর কিছু সাংবাদিকরা অর্থনৈতিক সুবিধা পেয়ে এই সিন্ডিকেটের সাথে রয়েছেন। অপপ্রচারকারিদের এই মিথ্যা, বানোয়াট ও কাল্পনিক অভিযোগের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ্বনাথে কর্মরত তিন সাংবাদিক সংগঠনের পক্ষ থেকে সম্প্রতি একটি বিবৃতি প্রদান করা হয়। প্রত্যাশা ছিল অপপ্রচারকারিদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে এবং তাদের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাইবে। কিন্তু আত্ম অহংকারে ডুবে থাকা সেইসব অপপ্রচারকারিদের বোধদয় ঘঠেনি।
তিনি লিখিত বক্তব্যে আরও বলেন, গত ৪ এপ্রিল এস.পি সেবু নামে ফেসবুকে সিলেট বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে ‘বিশ্বনাথে বাসিয়া নদীর বর্জ্য অপসারণে সরকারের ৭ লক্ষ টাকা অতল গহরে!’ শিরোনামে তার প্রতিবেদনে “বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী অফিসার তড়িগড়ি করে ঈদের তিন-চারদিন পূর্বে কাজ শেষ করে কিছু সাংবাদিকদের নিয়ে বসে তাদের মুখ বন্ধ করার ব্যবস্থা করেন যাতে বর্জ্য অপসারণের দূর্নীতির কোন সংবাদ প্রকাশিত না হয়”। একইদিন আরেক অপপ্রচারকারি শাহিন উদ্দিন, তার সম্পাদিত টেংরা বার্তা নামক ফেসবুক পেইজে ‘বিশ্বনাথে বাসিয়া নদীর বর্জ্য অপসারণে সরকারের ৭ লক্ষ টাকা অতল গহরে!’ শিরোনামে একটি লেখায় উল্লেখ করেন, “কিছু সাংবাদিক এ সিন্ডিকেটের মধ্যে রয়েছেন অর্থনৈতিক সুবিধা পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তড়িগড়ি করে ঈদের তিন-চারদিন পূর্বে কাজ শেষ করে কিছু সাংবাদিককে নিয়ে বসে তাদের মুখ বন্ধ করার ব্যবস্থা করেন যাতে বর্জ্য অপসারণের দূর্নীতির কোন সংবাদ প্রকাশিত না হয়”। গত ২৮ মার্চ অজিত দেব’র আলোচিত বিশ্বনাথ নামে একটি ফেসবুক পেইজে ‘ইউএনও’র সেচ্ছাচারিতায় তথ্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত বিশ্বনাথে কর্মরত সাংবাদিকরা!’ শিরোনামে “বিশ্বনাথের তিন সাংবাদিক সংগঠন অফিস আদালতের ঠিকাদারি গ্রহণ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সাথে ব্যক্তিগত সখ্যতা তৈরি, ইউএনও কর্তৃক উপহার উপটৌকন গ্রহণ, মাদক কারবারে জড়ানো, টিউবওয়েল বাণিজ্য, দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নসহ নানা বিষয়ে তারা প্রকাশ্যে হস্তক্ষেপ করার তথ্য উপাত্ত পাওয়া গেছে”। একই তারিখে মোঃ সায়েস্তা মিয়া নামক ফেসবুক আইডি থেকে শেয়ার করা হয়-লাল সবুজের দেশ নামক একটি পত্রিকার পাতা। এতে ‘ইউএনও’র সেচ্ছাচারিতায় তথ্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত বিশ্বনাথে কর্মরত সাংবাদিকরা!’ শিরোনামে লেখায় উল্লেখ করেন, “বিশ্বনাথের তিন সাংবাদিক সংগঠন অফিস আদালতের ঠিকাদারি গ্রহণ প্রশাসনিক কর্মকর্তাদের সাথে ব্যক্তিগত সখ্যতা তৈরি, ইউএনও কর্তৃক উপহার উপটৌকন গ্রহণ, মাদক কারবারে জড়ানো, টিউবওয়েল বাণিজ্য, দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নসহ নানা বিষয়ে তারা প্রকাশ্যে হস্তক্ষেপ করার তথ্য উপাত্ত পাওয়া গেছে”। তাদের এসব লেখায় বিশ্বনাথের সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কাল্পনিক অভিযোগ আনা হলেও সুনির্দিষ্ট কোন সাংবাদিকের নাম বা তাদের বিরুদ্ধে তথ্য ভিত্তিক কোন প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারেনি। বিশ্বনাথের সাংবাদিকদেরকে নিয়ে এস.পি সেবু, অজিত দেব, শাহিন উদ্দিন ও মো. সায়েস্তা মিয়া ঢালাওভাবে বিশ্বনাথের সাংবাদিকদেরকে ইউ.এন.ও কর্তৃক উপহার, উপটৌকন গ্রহণ, অফিস-আদালতের ঠিকাদারী গ্রহন, মাদক কারবারে জড়ানো, টিউবওয়েল বাণিজ্য, দলীয় এজেন্ডা বাস্তবায়নের সাথে সম্পৃক্ত থাকার একটি মিথ্যা অভিযোগ এনেছেন। পাশাপাশি বিশ্বনাথের বাসিয়া নদীর বর্জ্য অপসারণের দূর্ণীতির সংবাদ বন্দ করতে বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী অফিসার কিছু সাংবাদিকের মুখ বন্ধ করার ব্যবস্থা করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন।
বিশ্বনাথের তিন সাংবাদিক সংগঠনের পক্ষ থেকে উপরোক্ত চার অপপ্রচারকারীকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে বিশ্বনাথের কোন সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে কোন সুনির্দিষ্ট অভিযোগ থাকলে তা জনসমক্ষে তথ্য প্রমাণসহ উপস্থাপন করার জন্য আহবান করছি। অন্যথায় আজ থেকে আগামী ৩ দিনের মধ্যে অপপ্রচারকারিদেরকে বিশ্বনাথের তিন সংগঠনের সাংবাদিকদের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা চাওয়ার আহবান জানাচ্ছি। অন্যথায় তথ্য প্রমাণ ছাড়া সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এহেন মানহানিকর অপবাদের দায়ে অপপ্রচারকারীদের বিরুদ্ধে বিশ্বনাথের সাংবাদিক সমাজ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করতে বাধ্য হবে।
লিখিত বক্তব্যে বিশ্বনাথের তিন সাংবাদিক সংগঠনের পক্ষ থেকে বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুনন্দা রায়ের প্রতি আহবান জানানো হয়। তিনি যেন বাসিয়া নদীর বর্জ্য অপসারণ সংক্রান্ত সংবাদে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যক্তির আনিত অভিযোগ সম্পর্কে মিডিয়ার মাধ্যমে অফিসিয়ালি বক্তব্য প্রদান করেন। এতে বিশ্বনাথবাসীসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও দেশবাসী প্রকৃত সত্য কি তা জানতে পারবে। অপরদিকে আনিত অভিযোগ মিথ্যে হলে অপপ্রচারকারিদের বিরুদ্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দ্রæত আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করার জন্য আহবান জানান। যাহাতে মিথ্যা সংবাদের কারণে প্রশাসনের যে কোনো প্রকল্পগুলো স্বাভাবিক কার্যক্রমে ব্যাঘাত না ঘঠে।
তিন সাংবাদিক সংগঠনের যৌথ প্রেস ব্রিফিং এ উপস্থিত ছিলেন, বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবের সভাপতি রফিকুল ইসলাম জুবায়ের, বিশ্বনাথ মডেল প্রেসক্লাবের সভাপতি কামাল মুন্না, বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি কাজী মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন ও তজম্মুল আলী রাজু, বিশ্বনাথ মডেল প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আশিক আলী, বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী শিপন, বিশ্বনাথ মডেল প্রেসক্লাবের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আখতার আহমদ সাহেদ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক রোহেল উদ্দিন, বিশ্বনাথ প্রেসক্লাবের কোষাধ্যক্ষ জামাল মিয়া, সদস্য মাওলানা শহিদুর রহমান, নূর উদ্দিন, আবুল কাশেম, মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম, আহমদ আলী হিরণ, আবদুস সালাম মুন্না, সমুজ আহমদ সায়মন, সুজিত দেব, মাজহারুল ইসলাম সাব্বির, বিশ্বনাথ মডেল প্রেসক্লাবের সদস্য সালেহ আহমদ সাকি, এম আর টুনু তালকুদার, আবদুস সালাম, মশাহিদ আলী, আফজাল হোসেন, বিশ্বনাথ সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্য কামরুল আশিকী, রাজা মিয়া, তৌফিকুর রহমান হাবিব, মো. আবদুল্লাহ।